Select language to read news in your own language


Like SatSakal Facebook Page to stay updated.

AADHAR-এ নাগরিকত্ব আঁধারে

নরেন্দ্রনাথ কুলে

 

আধার কার্ডের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে সরকারি প্রশাসনের বেশি বেগ পেতে হয়নি । আধার কার্ড না থাকলে ব্যাঙ্ক, রেশন, গ্যাস, সিম কার্ড সহ সবকিছু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে । এই বিজ্ঞপ্তিতে মানুষের বিশেষ করে অতি সাধারণ মানুষের ঘুম উবে গিয়েছিল। 2009 সালে আধার কার্ডের সূচনা হলেও 2016 সাল থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় মানুষকে আধারিকরণের প্রক্রিয়া দ্রুত হয়েছে । অতি স্বল্প আয়ের মানুষজন কষ্টসাধ্য করে তাঁরা আধারিকরণের আওতায় এসেছে যাঁরা কিছু না জেনে প্রথমেই গুরুত্ব দিতে পারেনি । একদিন কাজ না করলে যাঁদের পেট চলে না। তার জন্য যেটুকু আর্থিক ব্যয় করতে হয়েছে তাঁদের কাছে তা বেশ কষ্টসাধ্যই । সেই কষ্টার্জিত আধার কার্ড নাগরিকত্ব প্রমাণের চূড়ান্ত প্রমাণ নয় বলে মহামান্য উচ্চতম আদালত বলেছেন । নাগরিক হিসেবে সরকারি সুবিধা পাওয়া থেকে ব্যবহারিক জীবনের আধার-এ জড়িয়ে দিতে 'আধার কার্ড' কে যেভাবে অপরিহার্য করে তোলা হল, এক লহমায় সরকারিভাবে সেই কার্ডকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হল । অথচ এই কার্ড প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব খরচ করতে হয়েছে । 2019 সালের হিসেব বলছে বারো হাজার কোটি টাকার ওপর । এত পরিমাণ টাকা সরকারের ব্যয় হল, অথচ নাগরিকের দুশ্চিন্তা বেড়ে গেল । যে কার্ড করার জন্য মানুষের ঘুম উবে গিয়েছিল, সেই কার্ড থেকেও একই অবস্থার শিকার হতে হল । মুম্বাইয়ের মহামান্য আদালত আবার বলেছেন আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড থাকলেই নাগরিকত্বের প্রমাণ হয় না । এটা ঠিক জাল চক্রে জাল নথি দিয়ে কিছু মানুষের এই কার্ড হয়েছে এদেশে । কিন্তু সেই জাল চক্রে শুধু অসাধু মানুষ আর অসাধু সরকারি আধিকারিকের হাতে হয়েছে বলে প্রশাসন দায় এড়িয়ে যেতে পারে না । এদেশে সরকারি আধিকারিক শুধু অসাধু, আর রাজনৈতিক নেতা মানেই সৎ এমনভাবে ভাবতে গেলে হয়তো বিড়ালও আজ হাসবে । সরকারি আধিকারিকদের স্বাক্ষরে কাজ হয় । আর নেতারা কথার ঈশারায় স্বাক্ষর করায় । স্বাক্ষরে জাল ধরা পড়লেও নেতার কথায় নেতা ধরা পড়ে না । এ কথাটা সরকারি আধিকারিকরা আজও বোঝেও বোঝে না। ঠিক ভোটের আগে এই চক্রের কথা উঠলেই বাদবাকি সাধু প্রমাণিত হয় না । তবে মহামান্য আদালতের কথায় বর্তমানে কার্ড নিয়ে মানুষের শরীর কাঠ হয়ে যাওয়ার অবস্থা ।
বিজেপি সরকার যা বলে তা করে দেখায় । সব সরকারই হয়তো করে, কিন্তু এই সরকার আলাদাভাবে তা করে । বিজেপি সরকার আসা থেকেই তাঁদের ভোটের ইস্তাহার অনুযায়ী বছরে দু'কোটি কর্মসংস্থান আর কালো টাকা উদ্ধার হয়তো হয়নি, কিন্তু তাঁরা 370 ধারা বিলোপ করেছে, রামের বাসভূমি উদ্ধার করেছে । নাগরিকত্ব প্রশ্নে তাঁদের আনা বিল থেকে আইন ভোট এলেই মাথাচাড়া দেয়, কিন্তু তার চূড়ান্ত পদক্ষেপের দিকে সরকার এখনো এগোতে পারেনি । বাংলা সহ পূর্বাঞ্চল রাজ্যের ক্ষেত্রে তাঁদের বহিরাগত তত্ত্বে তাঁরা একইভাবে অনড় । সেই অনড় অবস্থান থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তাঁদের সেই কাজটি সুপরিকল্পিতভাবে সম্পাদনার পথে । বহিরাগত তত্ত্ব প্রমাণের এই প্রক্রিয়ায় একেবারে দরিদ্র মানুষদের যাঁদের 'নুন আনতে পান্তা ফুরোয়' অবস্থা তাঁদের   আবার বিপদে পড়তে হবে । এটা নিশ্চিত । আর আধার-এ নাগরিকত্ব আঁধারে, আদালতের রায়ে নেই কোন আর বাধারে । 

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon



Tags: