Select language to read news in your own language


Like SatSakal Facebook Page to stay updated.

জীবন বাঁচানোর মহৎ অঙ্গীকার


যোগমায়া আচার্য

 

প্রতি বছর ১৩ আগস্ট বিশ্বজুড়ে পালিত হয় World Organ Donation Day, যা অঙ্গদান সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জীবন রক্ষায় এক মহৎ উদ্যোগকে সামনে আনে। এই দিনের উদ্দেশ্য একটাই—মানুষকে বোঝানো যে, মৃত্যুর পর বা জীবিত অবস্থায়ও অঙ্গদানের মাধ্যমে অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।

অঙ্গদান কোনো ধর্ম, জাতি বা সংস্কৃতির সীমায় বাঁধা নয়; বরং এটি মানবতার এক অনন্য উদাহরণ। হৃদয়, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, কর্নিয়া—এমন অনেক অঙ্গ ও টিস্যু আছে যা দান করে অন্যের জীবন ফেরানো যায়। উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তির কল্যাণে আজ অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটি সফল ও বহুল ব্যবহৃত চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। তবুও, বিশ্বজুড়ে অঙ্গের চাহিদা আর প্রাপ্যতার মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে।

ভারতের মতো দেশে অঙ্গদানের হার এখনও খুবই কম। এর প্রধান কারণ সচেতনতার অভাব, ভুল ধারণা এবং সামাজিক কুসংস্কার। অনেকেই মনে করেন মৃত্যুর পর অঙ্গদান করলে ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক ক্ষতি হবে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাস্তবে প্রায় সব বড় ধর্মই অঙ্গদানের মাধ্যমে জীবন বাঁচানোর পক্ষে। তাই প্রয়োজন শিক্ষা, তথ্য, এবং ইতিবাচক প্রচারের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন।

অঙ্গদান কেবল চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাফল্য নয়, এটি এক গভীর মানবিক দায়িত্ব। একজন ব্যক্তির অঙ্গদানের মাধ্যমে প্রায় ৮ থেকে ১০ জন মানুষের জীবন সরাসরি রক্ষা করা যায়, আর আরও অনেকের জীবনে আলো ফিরিয়ে আনা যায়। উদাহরণস্বরূপ, কর্নিয়া দান করলে দৃষ্টিশক্তি হারানো মানুষ আবার পৃথিবীকে দেখতে পায়, আর কিডনি বা লিভার দান করলে দীর্ঘদিনের কষ্টমুক্ত জীবন ফিরে পেতে পারে কেউ।

বিশ্ব অঙ্গদান দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমাদের মৃত্যুর পরও জীবন দেওয়ার ক্ষমতা আছে। তাই জীবিত অবস্থায় অঙ্গদানের ইচ্ছা প্রকাশ করা, পরিবারের সদস্যদের জানানো, এবং প্রয়োজনে সরকারি অনুমোদিত অঙ্গদান নিবন্ধনে নাম লেখা জরুরি। সমাজে এই মহৎ উদ্যোগের প্রসার ঘটাতে এগিয়ে আসা প্রয়োজন সবার।

অঙ্গদানের প্রতিটি সিদ্ধান্ত এক নতুন আশা, এক নতুন জীবন, এক নতুন ভোরের সূচনা। জীবনের শেষ সীমান্তেও আমরা হতে পারি কারও বেঁচে থাকার কারণ—এটাই মানবতার সর্বোচ্চ সৌন্দর্য।

 

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon