মায়া বসুচৌধুরী :
বেনারসে এই আরতির টানেই আসেন লক্ষ লক্ষ পর্যটক। সন্ধ্যা আরতি দেখার মতো এখানকার।উত্তর প্রদেশের বর্ষায় বহু রাস্তা জলমগ্ন। এখানকার গঙ্গার ঘাটের উপরে বইছে এখন জল,আরতি হওয়ার উপায় নেই । তাই গঙ্গা আরতি উঠে এসেছে বাড়ির ছাদে ছাদে।
প্রদর্শনীর গুণে, এই আরতি দেখতে বহু দেশ বিদেশের মানুষ আসেন আজও। কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরের অদূরে গঙ্গা তীরে প্রায় প্রতিদিনই হয় এই আরতি। গঙ্গা নদীর তীরে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত একটি ধর্মীয় আচার, ভক্তি আর শ্রদ্ধার সঙ্গে সঙ্গে দেবী গঙ্গার প্রতি নিবেদিত হয় ধূপ দীপের আলো। এই আরতি মূলত বারাণসী (বেনারস), হরিদ্বার, ঋষিকেশের মতো শহরগুলিতে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে অনুষ্ঠিত হয়। এই আরতি একটি আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনী। পূজা মন্ত্র, স্তোত্র এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে সম্পন্ন হয় এই আরতি। সঙ্গে চলে গান।
গঙ্গা আরতি একটি অপেক্ষাকৃত আধুনিক ঐতিহ্য, যা সাজানোর জন্যই তৈরি করা হয়েছিল ঘাট গুলোকে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে শুরু হয় এই আরতি গঙ্গার ঘাটে ঘাটে।
হরিদ্বারে পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য ১৯১৬ সালে এই আরতি শুরু করেন। তারপর থেকে শ্রী গঙ্গা সভা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে এখনও পর্যন্ত।
বারাণসীর দশাশ্বমেধ ঘাটে প্রতিদিন সন্ধ্যায় গঙ্গা আরতি অনুষ্ঠিত হয়। যা আজও ভক্তদের কাছে একটি জনপ্রিয় আকর্ষণ। শুধু আকর্ষণ নয়। এর সঙ্গে অর্থনীতিও যুক্ত হয়ে আছে। লেখক রাধামাধব মণ্ডল আরও বলেন,এই আরতি গঙ্গা নদীর প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা আর পরমা প্রকৃতির প্রতি পুজো জানানোর একটি মাধ্যম। যা হিন্দু ধর্মে দেবী হিসেবে পূজিত হন এই গঙ্গা। সে সব পুরাণ কাহিনি অনুসারে, রাজা ভগীরথের প্রচেষ্টায় গঙ্গা পৃথিবীতে এসেছিলেন। বিশ্বাস করা হয় যে তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের ভস্মকে শুদ্ধ করার জন্যই এসেছিলেন। সে সব কাহিনিকে দূরে সরিয়ে রাখলে, এই আলো দীপের প্রদর্শনী দেখার মতো। সান্ধ্য আকাশে আলো, ঘণ্টা আর বৈদিক মন্ত্র পাঠের উচ্চারণ সত্যিই মুগ্ধ করে আমাদের। আপনি কিসের টানে এসেছেন এখানে, লেখক রাধামাধব মণ্ডল বলেন, বহু সুরের জন্ম বেনারসের এই গলিতে। সেই সুরের সাধকদের নিয়ে একটি উপন্যাস লিখতে চাই। সে কারনেই রেকি করতে এসেছি।