সোমনাথ চৌধুরী :
সম্প্রতি খানাকুলের চিংড়া দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ সমবায় সমিতির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে নিজের ভাষনে বিতর্ক ছড়ালেন।প্রকাশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ল 'তুই তুকারি' থেকে 'বেঁধে রাখার কথা' সবটাই। বিজেপির দলীয় কর্মীদের সমর্থন থাকলেও তৃণমূলের পাল্টা কটাক্ষে উত্তাল এলাকার রাজনৈতিক পরিবেশ।
প্রসঙ্গত, বুধবার খানাকুলের চিংড়ায় সমবায় সমিতির দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপির (BJP) পক্ষ থেকে ডেপুটেশন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, ভোজ-বিলাস চলছে কৃষকদের টাকা লুট করে সেই টাকায়। আর সেই অভিযোগেই ক্ষুব্ধ হয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুশান্ত ঘোষ বলেন, “কৃষকদের টাকা লুট করে মদ-মাংস চলছে। তোর বাপের টাকা নাকি রে?” একইসঙ্গে ম্যানেজারকে দেখতে পেলে বেঁধে রাখার কথাও বলেন তিনি।
বিধায়কের এহেন মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। বিরোধী দল বিধায়কের মন্তব্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেও নিজের মন্তব্য থেকে একচুলও সরেননি বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ। তাঁর সাফ কথা, “এটা ভাষা সন্ত্রাস নয়। এটা জনগণের আওয়াজ। এখানকার মা-বোনেরা কাঁদছে। কোনও লাভ হয়নি বারবার প্রশাসনের কাছে গিয়েও, রাতের দিকে এলাকায় বোমাবাজিও হয়েছে।”
পাশাপাশি বিরোধী শিবিরের একাংশ মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য শোভা পায় না বিধায়কের মুখে । অবশ্য তাঁকে সমর্থন করেছেন স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতাদের একাংশ। বিজেপি নেতাদের মতে, “কেউ কিছু বলে না তৃণমূল নেতারা যখন গালিগালাজ করে"। তাহলে বিজেপি বিধায়ক বললে সমস্যা কোথায়?”বিজেপি (BJP) বিধায়কের বক্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বিধায়কের এই ভাষা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। খানাকুল ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বলেন, “খানাকুলের বিধায়ক আতাল-মাতালদের নিয়ে সমবায় ঘেরাওয়ের নাটক করছেন। বুঝে গিয়েছেন যে এবার আর ফিরে আসা সম্ভব নয়,তাই হঠাৎ এমন গালিগালাজ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের আগে একে অপরের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো নতুন কিছু নয়, তবে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভাষার শালীনতা নিয়ে।