ছন্দা আচার্য
প্রকৃতির সবচেয়ে বড় হুমকির একটা হলো মরুভুমি ও খরা — যে দুর্যোগ নির্দয় ও অমৃত্যু নিয়ে আসে ভূমিতে, গাছে, ঘরে ও জীবনে। ঠিক এই হুমকির সাথে লড়াই করার অঙ্গিকার প্রকাশ করাই বিশ্বর মরুভুমি ও খরা মোকাবিলা দিবস (World Day to Combat Desertification and Drought) — যা পালন করা হয় প্রতি বছর ১৭ জুন।
মরুভুমি ও খরা মানে হলো অনাবাদিতে পরিণত হওয়া ভূমিতে উদ্ভিদের হ্রাস, মাটির উর্বরতা নষ্ট হওয়া ও জলে ঘাটতি — যা একটা পরিবেশের সম্পূর্ণ বিন্যাস ও অর্থনৈতিক ভিত্তিতে অপরিবর্তনীয় ঘাটতি সৃষ্টি করে। এর ফল হিসেবে দুর্বল হয় খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য বাড়ে এবং গ্রাম ও শহরগুলিতে দুর্দশা নেমে আসে।
বিশ্বর অন্তত ১৬৯টি দেশ মরুভুমি ও খরা কবলে রয়েছে, এবং এই হুমকিতে রয়েছে অন্তত দেড় বিলিয়ন মানুষ — বিশেষ করে যে গ্রামগুলিতে কৃষিই জীবিকার একমাত্র উপায়। পরিবেশের এই ঘাটতি আরও ঘরোয়া ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে, যা সবাইকে অনিশ্চয়তা ও দুর্দশায় ফেলেছে।
কিন্তু আশার আলোও রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দীর্ঘমেয়াদী কৃষির অনুশীলন, গাছ রোপন ও ভূমির ব্যবহারে সুসংগঠিত ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে মরুভুমি ও খরা মোকাবিলা করা যায়। অনেক দেশে নতুন ওয়েটল্যান্ড সৃষ্টি হয়েছে, অনুচরিত ভূমিতে ঘন অরণ্য গড়ে উঠেছে, এবং এর সাথে সাথে গ্রামগুলিতে আবার এসেছে সুস্থতা ও স্বনির্ভরতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্থিতিশীল ভূমির ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে — সরকার, সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়িকমহলকে একটা ঐক্যবন্ধন সৃষ্টি করতে হবে। এর সাথে চাই পরিবেশ শিক্ষা ও সচেতনতা — যা ভবিষ্যত প্রজন্মকে জানাবে পরিবেশ ও মাটি হলো অমৃত, যা সবাইকে বাঁচিয়ে রাখে।
বিশ্ব মরুভুমি ও খরা মোকাবিলা দিবস হলো সেই অঙ্গিকার ও আশার দিন — যে দিন সবাই মনে করিয়ে দিতে পারে যে পরিবেশকে সুস্থ ও উর্বর রাখা মানে হলো মানবজাতির টিকে থাকার পথকে সুগম রাখা। গাছ ও জল হলো জীবন — তাই তাদের রক্ষা করাই আমাদের সবার ধর্ম ও কর্তব্য।