বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা এলন মাস্কের স্টারলিংক (Starlink) ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করতে প্রস্তুত। সম্প্রতি তারা ভারতের Department of Telecommunications (DoT) থেকে GMPCS লাইসেন্স পেয়েছে। এই পরিষেবার লক্ষ্য—দুর্গম অঞ্চলেও উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া।
স্টারলিংকের মতে, তারা প্রথম পর্যায়ে ₹৩৩,০০০ মূল্যের একটি কিট (ডিশ, রাউটার ইত্যাদি) সরবরাহ করবে এবং গ্রাহকরা পাবেন ১ মাসের ফ্রি ট্রায়াল।
ট্রায়ালের পর, প্রতি মাসে ₹৩,০০০ টাকার সাবস্ক্রিপশন মডেলে ইন্টারনেট পরিষেবা মিলবে। যদিও এই দাম শহরাঞ্চলের অনেকের কাছে বেশি, গ্রামীণ এলাকার জন্য এটি একটি যুগান্তকারী অফার। এই পরিষেবার মাধ্যমে বিদ্যমান মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়াই, উপগ্রহ থেকে সরাসরি ব্রডব্যান্ড সংযোগ পাওয়া যাবে।
ভারতের শীর্ষ টেলিকম সংস্থা Reliance Jio ও Bharti Airtel এই পরিষেবাকে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে। তারা COAI (Cellular Operators Association of India)-এর মাধ্যমে অভিযোগ তুলেছে যে Starlink-এর লাইসেন্স ফি তুলনামূলকভাবে কম, যা অন্য সংস্থাগুলোর জন্য প্রতিযোগিতায় বৈষম্য সৃষ্টি করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, Starlink-এর প্রবেশ বর্তমান বাজার কাঠামো বদলে দিতে পারে, বিশেষ করে সেইসব জায়গায় যেখানে এখনও ফাইবার অপটিক বা 5G পৌঁছায়নি।
যদিও লাইসেন্স হাতে এসেছে, তবুও স্টারলিংককে এখনো পেতে হবে ISRO ও In-SPACe-এর অনুমোদন, স্পেকট্রাম বরাদ্দ, সিকিউরিটি টেস্টিং এবং ল্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার অনুমোদন। এগুলো পেলে, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পরিষেবা শুরু হতে পারে।
Starlink-এর লক্ষ্য খুব স্পষ্ট—ভারতের দুর্গম, পাহাড়ি ও গ্রামীণ এলাকাগুলিতে সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া।
এতে যেমন ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পে গতি আসবে, তেমনই বর্তমান টেলিকম জায়ান্টদের মূল্য ও প্রযুক্তি পরিষেবা নিয়েও ভাবতে হবে।
Starlink-এর ফ্রি ট্রায়াল এবং আগ্রাসী সাবস্ক্রিপশন মডেল একদিকে যেমন জনগণের ইন্টারনেট ব্যয় কমাতে পারে, অন্যদিকে দেশীয় টেলিকম সংস্থাগুলোর বাজার অংশীদারিত্বেও সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
এই প্রযুক্তি শুধু একটি নতুন পরিষেবা নয়, বরং একটি ডিজিটাল বিপ্লবের শুরু—যেখানে গতি, ব্যয় এবং পৌঁছনোর পরিসীমা নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে।