Select language to read news in your own language

মাথায় বিধায়কের হাত! তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির দোসর সিভিক পুত্র, নীরব প্রশাসন!



রাবণ মণ্ডল

আউশগ্রাম: তার বিরুদ্ধে একাধিক তোলাবাজির অভিযোগ! কিন্তু বেঁচে যাচ্ছেন শুধু আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের হাত মাথায় আছে বলে, এমনটাই সূত্রের খবর! নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক কর্মীর অভিযোগ, আউশগ্রামের সমস্ত সরকার অনুমোদিত পদ রয়েছে তার ঘরেই। শুধু বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের খাস লোক বলেই তিনি এমনটা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। 
গতকাল (শুক্রবার) সকালে আউশগ্রামের সরকারি জমি দখল ঘিরে যখন সোরগোল শুরু হয়, সে সময়ও আউশগ্রামের এই দোদণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা গিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকে বিধায়কের ছত্রছায়ায় বলে জানা যায়! সূত্রের আরও খবর, গত কাল সারাদিন ধরে জবরদখল খাস জমিটিকে কি ভাবে কারখানা নির্মাণের পর ৯৯ বছরের লিজ পাইয়ে দেওয়া যায়, তার চেষ্টা চালিয়ে যান! তবে আউশগ্রামের এই গুনধর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সেখ ইমদাদুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এর আগেও উঠেছে! বনদপ্তরের এক সরকারি আধিকারিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ছিলেন তিনি বলে জানা যায়! যদিও সেবার সে সময়ের আউশগ্রামের আইসি উত্তম মণ্ডল আউশগ্রামের বিধায়কের কথায় বাঁচিয়ে দেন!
 এবার সেই গুনধর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সেখ ইমদাদুলের ছেলে প্রায় দুবিঘা পরিমাণ সরকারি খাসজমি জবরদখল করে কারখানা তৈরি করছেন! তৃণমূল নেতার ছেলের এমন কীর্তির পিছনেও সেই আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের নাম, এমনটাই দাবি করেন তৃণমূলের এক অংশ। প্রশাসন, পুলিশের নজর এড়িয়ে সরকারি খাস জমিতে নির্মাণকাজ এদিকে প্রায় শেষের দিকে! কি ভাবে ঘটছে এমন ঘটনা, উঠছে প্রশ্ন! 
এদিকে আউশগ্রামের সরকারি জমিতে কারখানা চালুর মুখেই ঘটনার কথা জানাজানি হয়ে যায় এলাকায়। শেষপর্যন্ত বিষয়টি গিয়ে পৌঁছায় প্রশাসনিক কর্তাদের কাছেও। এনিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহলেও। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের ঘটনা আজকে প্রথম নয়!
আউশগ্রাম থানা লাগোয়া আউশগ্রাম বাজার ঢোকার কিছুটা আগে, প্রেট্রোল পাম্পের কাছাকাছি গুসকরা ইলামবাজার রাজ্যসড়কের পাশেই রয়েছে ওই সরকারি খাসজমি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে আউশগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ইনদাজুল শেখের ছেলে জিয়াউল শেখ ওরফে সাহেব বিঘাদুয়েক ওই জমির উপর একটি অ্যাশ ব্রিক অর্থাৎ ছাই থেকে ইঁট তৈরির কারখানা তৈরি করে ফেলেছেন রাতারাতি। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কি ভাবে তৈরি হল এমন কারখানা উঠছে প্রশ্ন! প্রায় দুমাস আগে থেকেই অবৈধ ভাবে জমিতে মাটি ভরাট করে নির্মাণকাজ শুরু করেন তৃণমূল নেতা। লোহার বিমের খাঁচায় টিনের ছাউনি ইতিমধ্যেই রেডি হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি প্রশাসনিক মহলে খবর যায় যে, জমির উপর ওই তৃণমূল নেতার ছেলের নির্মিয়মান কারখানাটি রয়েছে সেটি আদপে সরকারি খাসজমি। এখনও সরকারি সম্পত্তির খতিয়ানে অর্থাৎ এক নম্বর খতিয়ানে রয়েছে ওই সম্পত্তি। স্থানীয়সূত্রে খবর, আউশগ্রাম মৌজার সে সরকারি জমির দাগ নং ১১৬০৬, শ্রেণি শালী। 
ভূমি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে জমির উপর কারখানার জন্য নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জিয়াউল শেখ আউশগ্রাম মৌজায় ৭২ শতক পরিমাণ ওই জমি সরকারি খাসজমি। তবে ওই জমিতে মালিকানা না থাকা সত্ত্বেও জবরদখল করে শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে আউশগ্রাম অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ইনদাজুল শেখের ছেলে কারখানার কাজ শুরু করেছেন কি ভাবে তা নিয়েই উঠছে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সেখ ইমদাদুলের স্ত্রী আউশগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান! তার ছেলের বৌ আউশগ্রাম হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেও জানা যায়। এবং অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সেখ ইমদাদুলের ছেলেও আউশগ্রাম থানার সিভিক। তিনি নিয়মিত ডিউটি না করেও বেতন পান, বাবা ইমদাদুল আর বিধায়কের ক্ষমতায় বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আউশগ্রামের মানুষ। 
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি রাজস্ব) বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন," ঘটনার কথা শুনেছি। এভাবে কেউ সরকারি সম্পত্তি জবরদখল করতে পারে না। তদন্ত চলছে। যে বা যারাই করুক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে তিনজনের কমিটি গঠন করা হয়েছে এই বিষয়ে।"
যদিও ওই অভিযোগের কথা  ইনদাজুল শেখ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। ইনদাজুল হক বলেন," ওই কারখানা আমার ছেলে করেনি। কে করছে আমরা কিছু জানি না।" যদিও নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আউশগ্রামের কয়েকজন সাধারণ মানুষের অভিযোগ, ইমদাদুল দিনে পুকুর চুরি করছে তৃণমূলের বেনারে! ভয়ে কেউ কিছু বলে না! কোনো বিচার হয় না তো। সে আগেও বননবগ্রামের একজনের পৈতৃক ভিটাতে পাঁচিল দেওয়ার জন্য লক্ষ টাকার তোলা নেয়। সে খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ হয়। কিন্তু তবুও কিছু হল না! আউশগ্রামের বিধায়কের ডান হাত! তার সমস্ত অপকর্মের দোষর এই ইমদাদুল! 
ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon