হাতি বিশেষজ্ঞ সোনাতন মুরমুর মৃতদেহ
রাবণ মণ্ডল
আউশগ্রাম : ২৬ শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দক্ষিণবঙ্গের হাতির করিডর একেবারেই ফাঁকা করে দিল বনদপ্তর! যখন তখন দলমা পালানো হাতির দল ঢুকে পরলে বিপাকে পড়তে পারে সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন! যেহেতু হাতির করিডর পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, থেকে বর্ধমানের আউশগ্রাম জঙ্গলমহলের একটা বড় অংশ জুড়ে! গত কয়েক বছরে হাতির আনাগোনা বেড়েছে আউশগ্রাম পর্যন্ত! তাহলে সরকারকে বিপাকে ফেলতে কি নতুন চক্রান্ত করছে না তো বনদপ্তরের একশ্রেণির আধিকারিকরা, উঠছে সেই প্রশ্ন!
কেন? দক্ষিণ থেকে উত্তর বন্য দামাল হাতি থেকে হিংস্র বন্যপ্রাণীর নিয়ন্ত্রক বন্যপ্রাণী বিশেষঞ্জ বাঁকুড়ার বিট অফিসার সোনাতন মুরমু মারা গেছেন বলে সূত্রের খবর। গত ৫ ই জুলাই তিনি মারা গেছেন! সোনামুখী হাসপাতালে ভর্তির পর তার শ্বাসকষ্ট বাড়ে, তাকে রাতেই বনদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় বাঁকুড়ার সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে মারা যান তিনি বলে জানা যায়! গত বছর তিনি চাকরি থেকে অবসর নিলেও বন্য প্রাণীর টানে ডিপার্টমেন্ট ডাকলেই তিনি ছুটে আসতেন, ভালবাসার টানে। জীবন্ত হাতি বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি!
বনদপ্তর পাশে দাঁড়িয়ে তার দাহ কার্য করিয়েছে সূত্রের খবর। এবার বনদপ্তরের বর্ধমান ডিভিশনের ডিএফও সঞ্চিতা শর্মার অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায়, হাতিসহ বন্যপ্রাণীকে ঘুম পারানী ইঞ্জেকশন দেওয়ার শেষ ভরসা, বিশেষজ্ঞ প্রণব দাসকেও পানাগড় রেঞ্জের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল উত্তরবঙ্গে! ট্যাংকুলাইজ করাতে রাজ্যের একমাত্র বিশেষজ্ঞ প্রণব দাসকে সরিয়ে চোরাকারবারের করিডর পরিস্কার করলেন জেলা ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অথচ নিজের চুরির বলয় টিকিয়ে রাখতে এভাবেই জেলার বর্ধমান ডিভিশনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অফিসারের উপর খর্গ ঝুলিয়ে রেখেছেন, বলে বনদপ্তরসূত্রে খবর।
বনদপ্তর সূত্রে জানা যায় দক্ষতা এবং বহু বছরের অভিজ্ঞতা জন্য, ২০২১ সালের নভেম্বরে আউশগ্রামে ৬১ হাতি আসার সময়ে আনা হয়েছিল প্রণব দাসকে বর্ধমান ডিভিশনে। সূত্রের খবর দীর্ঘদিন ধরেই তার সঙ্গে বনিবনা নেই জেলা ডিএফও সঞ্চিতা শর্মার! বরং তাকে পানাগড় রেঞ্জের দায়িত্ব থাকা অবস্থায় তিনি সরাসরি আদুরিয়া বিট অফিসার পিনাকী ভট্টাচার্যর চোখ দিয়েই জঙ্গলমহল সামলেছেন! ফলপ উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হাত মাথায় নিয়েই একাধিক দুনীতিতে নিজেকে জড়িয়েছেন পিনাকী ভট্টাচার্য বলে অভিযোগ! গাছ কেটে বিক্রি, মোরাম পাচার, মাটি চুরির মতো অভিযোগেও কোনো হেলদোল নেই জেলা ডিএফও সঞ্চিতা শর্মার! তিনি নিজেও রমনা পার্কের ভেতরে গাছ কেটে বিতর্কে জড়িয়েছেন!
আউশগ্রাম বিটের এক অফিসারকে গত বছর ২৪ শে অক্টোবর বদলী করেও বাঁচাতে পারেননি গুসকরার রেঞ্জ অফিসার, ডিএফও র আস্থাশীল সমীরণ মুখার্জিকে! গুসকরায় একাধিক বনদপ্তরের জায়গা নিয়ে জড়িয়ে ছিলেন দুনীতিতে, উঠেছে প্রশ্ন! শেষমেশ তাকে সিলভি কালচারের দপ্তরে মেদিনীপুরে দুনীর্তির কারণে বদলী হতে হয় বলে সূত্রের খবর! একাধিক প্রশ্ন ওঠা কাটোয়ার রেঞ্জ অফিসার শিবপ্রসাদ সিনহাকেও রেখে দেওয়া হয়েছে, ডিএফও সঞ্চিতা শর্মার অনৈতিক কাজের সঙ্গী বলেই সূত্রের খবর! কেতুগ্রামের একাধিক বন্যপ্রাণী হত্যায় হিটলারের মতো নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন এই আধিকারিক! সেটির তদন্তে গড়িমসি করে দায়সারা মামলা করে বনদপ্তর! অভিযুক্তকে বাঁচাতেই! সেই সঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বনদপ্তরের খাস তালুক ধরে রাখতে মরিয়া সঞ্চিতা শর্মা রাজ্যের একাধিক আধিকারিক থেকে নেতা মন্ত্রীর দারস্থ হচ্ছেন বলে সূত্রের খবর! কিন্তু ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাতির করিডরকে শূন্য রেখে, ঠিক কতটা নিরাপদ জঙ্গলমহলের দক্ষিণ বঙ্গের জেলা গুলি? সঞ্চিতা শর্মার খামখেয়ালি মেজাজে বিপাকে পরবে না তো সরকার, উঠছে প্রশ্ন! জেলায় নিজের দুনীর্তির গুটি সাজিয়ে রাখতে, এক অফিসারের একাধিক পদ! একাধিক দুনীতিতে জেরবার আদুরিয়া বিট, সোঁয়াই বিট (দেবশালা)র সেই বিতর্কিত অফিসার পিনাকী ভট্টাচার্যই! যা বর্ধমান বনদপ্তরে ডিএফও সঞ্চিতা শর্মার নিত্যদিনের সঙ্গী বলেই সূত্রের খবর! জেলার বিতর্কিত পানাগড় রেঞ্জের কাঁকসা বিট ও কসবা বিটের একসঙ্গে তেমনই দায়িত্বে রয়েছেন অসীম কুমার বাউড়ি! এবিষয়ে বনদপ্তরের সিসিএফ বিদ্যুৎ সরকারকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'প্রণবকে বদলী করেছেন মুখ্য বনপাল! আমি করিনি। দক্ষিণ বঙ্গে এই মুহূর্তে তেমন বন্য প্রাণী অচেতন করার বিশেষজ্ঞ নেই! এই সময় হাতি ঢুকলে খানিকটা চাপ হবে!' আমাদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, 'জেলা ডিএফও সঞ্চিতা শর্মাকে আদুরিয়া বিট অফিসার পিনাকী ভট্টাচার্যকে নিয়ে ওঠা বিতর্কের একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে, তার রিপোর্ট দিতে বলেছি। উনি এখনও তা দেননি। আমি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছি।' একাধিক পদে এক অফিসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমাদের অফিসার কম রয়েছে। হেমাংশু মণ্ডলকে আমি বীরভূমে বদলী করে দিয়েছি। কিন্তু ডিএফও একটি চিঠি করে তাকে জেলায় অফিসার কম আছে বলে রাখার কথা বলেছেন। তাকে কোথাও রাখবেন সেটা তার বিষয়। তবে সমস্ত বিষয়টি আমি আমার উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। দেখি তারা কি ব্যবস্থা নেয়! '