শিলিগুড়ি: ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্প্রতি শিলিগুড়ি করিডরে একটি উচ্চমাত্রার যুদ্ধ প্রস্তুতির মহড়া চালিয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘তিস্তা প্রহার’। তিন দিনব্যাপী এই সামরিক মহড়া উত্তরের সেনা কমান্ড পরিচালনা করেছে, যেখানে ট্যাঙ্ক, কামান, হেলিকপ্টার ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট একযোগে অংশ নেয়।
‘তিস্তা প্রহার’ মহড়ার সময় সেনারা রণকৌশল ও সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এই মহড়া এমন এক ভৌগোলিক অঞ্চলে আয়োজিত হয়েছে, যেটি কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ — ভারতের ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডর। এটি ভারতকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে সংযুক্ত রাখে এবং এর খুব কাছেই রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত।
এই মহড়া ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই কিছু জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, মহড়ার নামকরণ ‘তিস্তা প্রহার’ এবং অবস্থান—বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা—একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করতে পারে। বিশেষত, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ রয়েছে। ফলে, অনেকেরই প্রশ্ন—এই মহড়া কি কোনও কূটনৈতিক বা প্রতিরক্ষা বার্তা বহন করছে?
ভারতীয় সেনাবাহিনী অবশ্য বলেছে, এটি নিয়মিত মহড়ার অংশ এবং এর সঙ্গে কোনও আন্তর্জাতিক সংকেতের যোগ নেই। তবে মহড়ার সময় ও অবস্থান ঘিরে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে কৌতূহল ও উদ্বেগ—উভয়ই দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এখনো এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে কূটনৈতিক স্তরে স্বচ্ছ বার্তা এবং আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যখন এমন স্পর্শকাতর অঞ্চলে সেনা মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, শিলিগুড়ি করিডর কেবল ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও একটি কৌশলগত 'চোক পয়েন্ট', যার ওপর দৃষ্টি রাখছে দক্ষিণ এশিয়ার বহু শক্তিধর রাষ্ট্র।