পিয়া রায়
প্রতি বছর মে মাসের তৃতীয় শনিবার পালন করা হয় Armed Forces Day— অর্থাৎ সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এই দিনটি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সেনা, নৌ ও বায়ুসেনার সদস্যদের প্রতি সম্মান জানিয়ে উদ্যাপন করা হয়। এটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং জাতির প্রতি আত্মত্যাগ ও শপথ রক্ষাকারী বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি গর্বিত মুহূর্ত।
সশস্ত্র বাহিনী: রক্ষাকবচের প্রতীক
একটি স্বাধীন ও নিরাপদ রাষ্ট্র গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। দেশের সীমান্তে শত্রুর চোখ রোখা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষা, দুর্যোগে নাগরিকদের সাহায্য প্রদান, এমনকি আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনেও তাদের অংশগ্রহণ— সবই প্রমাণ করে তাঁরা কেবল সৈনিক নন, মানবতার অতন্দ্র প্রহরীও বটে।
ইতিহাস ও তাৎপর্য
Armed Forces Day প্রথম উদ্যাপন শুরু হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৫০ সালে, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে সম্মিলিতভাবে শ্রদ্ধা জানানোর উদ্দেশ্যে। ভারতে যদিও প্রধানত ১৫ জানুয়ারি (Army Day), ৮ অক্টোবর (Air Force Day) এবং ৪ ডিসেম্বর (Navy Day) আলাদাভাবে পালিত হয়, তবুও একটি সামগ্রিক সম্মান জানানো দিবস হিসেবে এই দিনটির তাৎপর্য দিন দিন বাড়ছে। এটি একটি সুযোগ, যেখানে আমরা সমগ্র সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি।
আত্মত্যাগের অনুপম নিদর্শন
গালওয়ান উপত্যকা থেকে কারগিল যুদ্ধ, সিয়াচেন হিমবাহ থেকে পুলওয়ামা— আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বারবার প্রমাণ করেছে, দেশ রক্ষায় তাঁরা কখনও পিছু হটেন না। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা উপেক্ষা করে, পরিবার থেকে দূরে থেকে, তাঁরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছেন। তাঁদের এই আত্মনিবেদন ও আত্মত্যাগের কোনো তুলনা হয় না।
তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা
আজকের দিনে শুধু বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোই যথেষ্ট নয়, বরং তাঁদের জীবন ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করাও জরুরি। দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ— এই চারটি গুণ একজন সেনার জীবনের মূলভিত্তি। তরুণ সমাজ যদি এই গুণগুলিকে ধারণ করে, তবে দেশের ভবিষ্যৎ আরও সুরক্ষিত ও উজ্জ্বল হবে।
উপসংহার
Armed Forces Day শুধুই একটি আনুষ্ঠানিক দিবস নয়— এটি একটি আবেগ, গর্ব, শ্রদ্ধা এবং দায়বদ্ধতার প্রতীক। এই দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক— দেশের এই অতন্দ্র প্রহরীদের পাশে থাকব, তাঁদের সম্মান করব এবং তাঁদের আত্মত্যাগ কখনও বিস্মৃত হব না।
সালাম জানাই তাঁদের, যাঁরা জেগে থাকেন বলে আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাই। জয় হিন্দ!