ভাস্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি :
ওঁদের মধ্যে কেউ সম্পূর্ণরূপে দৃষ্টিহীন, কেউ শ্রবণ প্রতিবন্ধী কেউ মানসিক ভাবে আবার কেউ ঠিক করে দাঁড়াতে অক্ষম হাড়ের দুর্বলতার কারণে। সমাজ তাই ওঁদের “বিশেষভাবে সক্ষম” বলে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু বারবার প্রমাণ করেছেন, সীমাবদ্ধতা তাঁদের থামাতে পারেনি। জীবনের দুটি বড় পরীক্ষা— মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে—সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে একই মঞ্চে প্রতিযোগিতা করে সাফল্যের স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছেন ওঁরা।
এই কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ শনিবার শিলিগুড়ির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘উত্তরের দিশারী’ আয়োজন করল বিশেষভাবে সক্ষম ২০২৫ সালের পরীক্ষায় কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান "সীমার মাঝে অসীম তুমি"। এদিনের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলা ও উত্তরবঙ্গের সব কটি জেলার একাধিক মেধাবী ছাত্রছাত্রীগণ।
বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠের ১০ জন ছাত্রছাত্রী, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ গার্লস হাইস্কুলের ৫ জন মাধ্যমিক ও ৫ জন উচ্চমাধ্যমিক কৃতি-সহ মোট ২০ জন মেধাবীকেও এদিন সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনা প্রদান করা হয় উত্তরবঙ্গের সব কটি জেলার ইনক্লুসিভ এডুকেশনের কোঅর্ডিনেটরদেরকেও। একটি হুইলচেয়ার প্রদান করা হয় জলপাইগুড়ি নিবাসী একজন শিশু অভিরুপকে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী বিশ্বধারানন্দ মহারাজ , সাউথ ক্যালকাটা আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা এবং প্রথম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পিএইচডি অর্জনকারী ডঃ মৌশ্রী বশিষ্ট, উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম প্যারাসাইক্লিস্ট ও আন্তর্জাতিক সোলো রাইডার শ্রী রাকেশ বনিক, দুর্বার মহিলা সমিতির সদস্যা শ্রীমতি ডলি সাহা এবং নর্থ বেঙ্গল হ্যান্ডিক্যাপ রিহ্যাবিলিটেশন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী চন্দন কুমার ঘোষ-সহ আরও অনেক বিশিষ্টজন। অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ১০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও এমএমআইসি (আইন ও আইটি বিভাগ) আইনজীবী কমল আগরওয়াল সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “ওঁদের সাফল্যই আমাদের অনুপ্রেরণা। জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার এই গল্পগুলো সমাজের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।”