পিয়া রায়
বিশ্বজুড়ে নানা দিবস পালিত হয়, তবে World Greatness Day এমন এক বিশেষ দিন, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—মহত্ত্ব আসলে কেবল ব্যক্তিগত অর্জনের মাপকাঠি নয়, বরং এটি মানবতার জন্য এক আলোকবর্তিকা। এই দিনটি উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে অনুপ্রাণিত করা, যাতে তারা নিজের জীবনে শুধু সাফল্যের দিকে নয়, নৈতিকতা, সহানুভূতি, উদারতা ও ন্যায়পরায়ণতার দিকে সমানভাবে মনোযোগ দেয়।
মহত্ত্বের সংজ্ঞা যুগে যুগে পরিবর্তিত হয়েছে। প্রাচীন কালে একজন যোদ্ধা তার সাহস ও বীরত্ব দিয়ে মহত্ত্ব অর্জন করত, একজন জ্ঞানী তার প্রজ্ঞা দিয়ে সম্মান পেতেন। আধুনিক সময়ে মহত্ত্ব কেবল খ্যাতি বা ধনসম্পদের সীমায় আটকে নেই; বরং এর মূল মাপকাঠি হলো মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার ক্ষমতা। আজকের দিনে একজন শিক্ষক, যিনি নিরলসভাবে ছাত্রদের শিক্ষা দিচ্ছেন; একজন চিকিৎসক, যিনি বিপদের মুখে রোগীর পাশে দাঁড়াচ্ছেন; কিংবা একজন সাধারণ মানুষ, যিনি দুর্দশাগ্রস্তের পাশে দাঁড়াচ্ছেন—তাঁরাও সমানভাবে মহৎ।
World Greatness Day আমাদের শেখায়, জীবনে সত্যিকারের মহত্ত্ব অর্জন করতে হলে অহংকার ত্যাগ করে বিনয়কে গ্রহণ করতে হয়। বড় কাজ করতে হলে বড় হৃদয়ের প্রয়োজন, আর বড় হৃদয় আসে তখনই, যখন আমরা অন্যের কল্যাণকে নিজের সাফল্যের অংশ হিসেবে দেখি। এই দিনে আমরা ইতিহাসের সেই মহান ব্যক্তিদের স্মরণ করি, যাঁদের জীবনকাহিনী মানবতার জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে আছে—মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, মাদার তেরেসা, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র—যাঁরা নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে বৃহত্তর মানবকল্যাণকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
এই দিবসটি শুধু অনুপ্রেরণার উৎস নয়, বরং আমাদের আত্মসমীক্ষারও সময়। আমরা নিজেদের কাছে প্রশ্ন রাখতে পারি—আমি কি এমন কিছু করছি যা আমার চারপাশের মানুষকে সুখ, নিরাপত্তা বা আশার আলো দিতে পারে? আমাদের দৈনন্দিন ছোট ছোট কাজ—একটি হাসি, একটি সহানুভূতির হাত, একটি সৎ উদ্যোগ—এসবই ধীরে ধীরে মহত্ত্বের দিকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়।
আজকের দ্রুতগামী ও প্রতিযোগিতামূলক জীবনে মানুষ প্রায়ই ভুলে যায় যে আসল শক্তি একে অপরকে সাহায্য করার মধ্যে লুকিয়ে আছে। World Greatness Day আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মহত্ত্ব কোনো একদিনের কাজ নয়, এটি আজীবনের যাত্রা। আমরা যদি প্রত্যেকে প্রতিদিন একটি করে সৎ কাজ করি, তবে আমাদের চারপাশের পৃথিবী অল্প সময়েই আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।
সত্যিকার মহত্ত্ব অর্জন মানে নিজের সীমানা পেরিয়ে অন্যদের জীবনে আলো জ্বালানো। আর সেটিই মানবতার সবচেয়ে বড় জয়।