নরেন্দ্রনাথ কুলে
আটাত্তর তম স্বাধীনতার উৎসবে মুখরিত দেশ । এ পর্যন্ত দেশকে কে কতটা এগিয়ে দিয়েছে তার হিসেব দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তিরঙ্গা পতাকাকে স্যালুট জানানো হয় পাড়ায় পাড়ায় গলিতে গলিতে ক্লাবে ক্লাবে এবং সরকারি অফিসে অফিসে । দেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বিশেষ গর্বের, বিশেষ মর্যাদার, বিশেষ সম্মানের । কিন্তু দেশের এই স্বাধীনতা মানুষকে কি দিয়েছে বা এখনো কি দিয়ে চলেছে ? কিংবা স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা বিষয়টি সকল মানুষের কাছে একইরকম, তা কি বলা যায় ? আর জি কর কান্ডে অভয়া র কাছে এই স্বাধীনতা কি দিতে পারলো ? অভয়ার মা-বাবার কাছে এই স্বাধীনতার স্বাদ কিরকম ? উত্তরপ্রদেশে হাথরাস কান্ডে দলিত মেয়েটি ও তার পরিবারের কাছে স্বাধীনতার মানে কি ? এই বাংলায় কামদুনী, হাঁসখালি কান্ডে খুন হয়ে যাওয়া মেয়ে দুটির পরিবারের কাছে দেশের স্বাধীনতার বার্তা কি দিতে পেরেছে ? শুঁটিয়া গণধর্ষণ কান্ডে প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস স্বাধীন দেশে দিবালোকে খুন হয়ে যান । বাংলায় ছাত্র আনিস খুন হয়ে যায়, অন্ধ্রপ্রদেশে রোহিত ভেমুলা র মত দলিত ছাত্রদের মরতে হয় বিদ্বেষের আগুনে । সত্যের জন্য লড়াইয়ে গৌরী লঙ্কেশ এবং নরেন্দ্র দাভালকার-এর মত সমাজকর্মী মানুষদের খুন হতে হয় । প্রশাসনের অনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবি, সাংবাদিক, চিকিৎসক সহ বিশিষ্ট মানুষদের অহরহ হেনস্থা হতে হয় এই স্বাধীন দেশে । অথচ খুনি , ধর্ষকরা অদৃশ্য শক্তির আড়ালে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়, বিশেষত যাঁরা প্রভাবশলী বিশেষণে ভূষিত । এই প্রভাবশালীদের কাছে দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ থাকেই।
আটাত্তর তম স্বাধীনতার উৎসবে মুখরিত দেশ । এ পর্যন্ত দেশকে কে কতটা এগিয়ে দিয়েছে তার হিসেব দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তিরঙ্গা পতাকাকে স্যালুট জানানো হয় পাড়ায় পাড়ায় গলিতে গলিতে ক্লাবে ক্লাবে এবং সরকারি অফিসে অফিসে । দেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন বিশেষ গর্বের, বিশেষ মর্যাদার, বিশেষ সম্মানের । কিন্তু দেশের এই স্বাধীনতা মানুষকে কি দিয়েছে বা এখনো কি দিয়ে চলেছে ? কিংবা স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা বিষয়টি সকল মানুষের কাছে একইরকম, তা কি বলা যায় ? আর জি কর কান্ডে অভয়া র কাছে এই স্বাধীনতা কি দিতে পারলো ? অভয়ার মা-বাবার কাছে এই স্বাধীনতার স্বাদ কিরকম ? উত্তরপ্রদেশে হাথরাস কান্ডে দলিত মেয়েটি ও তার পরিবারের কাছে স্বাধীনতার মানে কি ? এই বাংলায় কামদুনী, হাঁসখালি কান্ডে খুন হয়ে যাওয়া মেয়ে দুটির পরিবারের কাছে দেশের স্বাধীনতার বার্তা কি দিতে পেরেছে ? শুঁটিয়া গণধর্ষণ কান্ডে প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস স্বাধীন দেশে দিবালোকে খুন হয়ে যান । বাংলায় ছাত্র আনিস খুন হয়ে যায়, অন্ধ্রপ্রদেশে রোহিত ভেমুলা র মত দলিত ছাত্রদের মরতে হয় বিদ্বেষের আগুনে । সত্যের জন্য লড়াইয়ে গৌরী লঙ্কেশ এবং নরেন্দ্র দাভালকার-এর মত সমাজকর্মী মানুষদের খুন হতে হয় । প্রশাসনের অনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবি, সাংবাদিক, চিকিৎসক সহ বিশিষ্ট মানুষদের অহরহ হেনস্থা হতে হয় এই স্বাধীন দেশে । অথচ খুনি , ধর্ষকরা অদৃশ্য শক্তির আড়ালে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ায়, বিশেষত যাঁরা প্রভাবশলী বিশেষণে ভূষিত । এই প্রভাবশালীদের কাছে দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ থাকেই।
কাশ্মীরের সাধারণ জনসাধারণ প্রতিদিন এক আতঙ্কে যাঁদের দিন কাটাতে হয় তাঁদের কাছে স্বাধীনতার অর্থ কি ? এই মূহুর্তে দেশজুড়ে একেবারে 'দিন আনা দিন খাওয়া' হিসেবে দিন কাটায় যাঁরা, তাঁদের কাছে স্বাধীনতা কি ? শহরের ফুটপাতে যাঁদের সংসার তাঁদের কাছে স্বাধীনতা মানে শুধু কি পতাকার রঙ ? এই সময়ে যে সমস্ত বাঙালি শ্রমিক রাজ্যের বাইরে বাংলা বলার জন্য নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রশ্নে হেনস্থা হতে হচ্ছে তাঁদের কাছে এই স্বাধীনতা কি সুখকর ? এখন সংখ্যাগুরু আর সংখ্যালঘুর প্রশ্নে স্বাধীনতার ঐক্য দৃঢ় হতে পারছে কি ?
পথে পথে যাঁরা ন্যায় বিচারের জন্য লড়ছে । যেমন বাংলায় কর্মহীন যোগ্য শিক্ষকগণ, তাঁদের কাছে লড়াই করাটাই কি স্বাধীনতা ?
এই স্বাধীন দেশে এক শতাংশ মানুষের হাতে দেশের সত্তর শতাংশ সম্পদ পুঞ্জীভূত আছে । এই এক শতাংশ মানুষ এবং অবশিষ্ট নিরানব্বই শতাংশ মানুষের কাছে স্বাধীনতার অর্থ একমুখী হতে পারে বলে দাবি করা যায় কি ! তবে স্বাধীনতা দিবসে প্রকৃত স্বাধীনতার ইতিহাস মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনি । কেন পৌঁছতে পারেনি সে ইতিহাসও আজ মানুষের জানার অধিকার আছে । কে জানাবে তাঁদের ? না-জানানোর প্রক্রিয়া স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকেই আজও বহমান । স্বাধীনতা উৎসবে এ প্রশ্ন হারিয়ে যাচ্ছে ।