মুম্বই: গাজা ও প্যালেস্টাইন সংকট নিয়ে প্রতিবাদের অনুমতির জন্য সিপিএম (CPM) যে আবেদন জানিয়েছিল, তা খারিজ করে বম্বে হাইকোর্ট কঠোর ভাষায় জানিয়ে দিল, "দেশপ্রেম" মানে দেশের ভেতরের সমস্যা নিয়ে কথা বলা, বিদেশি ইস্যু নিয়ে নয়। আদালতের সোজাসাপটা পর্যবেক্ষণ—“Be patriots. Speaking for Gaza and Palestine is not patriotism.”
সিপিএম একটি ‘জেনোসাইড ডে’ পালন করার জন্য মিছিলের আবেদন জানায়। সেই প্রেক্ষিতে আদালত জানায়, মিছিল ও প্রতিবাদ করার অধিকার থাকলেও তা দেশের স্বার্থে হতে হবে। বিচারপতি ভরত দেশপাণ্ডে ও রাজেশ পাটিলের ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে বলেন— “Why don’t you take up issues concerning this country? Floods, traffic congestion, poor public transport, potholes — there is no dearth of causes here. Be patriots.”
আদালতের মতে, দেশে বহু জনসাধারণের সমস্যা রয়েছে, যেগুলি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যদি সচেতন থাকত, তবে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন হতো। অথচ গাজা বা প্যালেস্টাইনের মতো আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে মিছিল করার অনুরোধ আদৌ যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করেছে হাইকোর্ট।
সিপিএম-এর তরফে বলা হয়েছিল, তারা মানবিক কারণে এই প্রতিবাদ করতে চায়। কিন্তু আদালত মনে করিয়েছে, দেশীয় আইনের পরিপন্থী বা আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে পারে এমন কোনও কর্মসূচিকে অনুমতি দেওয়া যায় না।
আদালতের এই রায়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সিপিএম ও অন্যান্য বামপন্থী দল রায়টির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে, এবং এটিকে মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেছে। তবে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—দেশের মাটি, মানুষের সমস্যা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি দায়বদ্ধতাই প্রকৃত দেশপ্রেমের প্রতিফলন।
এই রায় শুধু সিপিএম নয়, বরং দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের জন্য একটি বার্তা বহন করে—দেশপ্রেম মানে শুধু আন্তর্জাতিক মানবিক ইস্যুতে আওয়াজ তোলা নয়, বরং নিজের দেশের মানুষের সমস্যা নিয়ে সরব হওয়াটাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আদালতের কথায়, “দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা রাখুন — এটাই প্রকৃত দেশভক্তি।”


