আজ, ২৭ আগস্ট ২০২৫, মহারাষ্ট্রসহ সমগ্র ভারতজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে গণেশ চতুর্থী। দেবতা গণেশের জন্মতিথি উপলক্ষে শুরু হয়েছে দশ দিনব্যাপী উৎসব, যার সূচনা হয়েছিল ২৬ আগস্ট দুপুর ১টা ৫৪ মিনিটে এবং আজ বিকেল ৩টা ৪৪ মিনিটে সমাপ্ত হবে চতুর্থী তিথি। সকাল থেকেই ভক্তরা পুজো, আরতি ও নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। দুপুর ১১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ছিল পূজার সবচেয়ে শুভ সময়।
মহারাষ্ট্রে উৎসবের আবহ আরও জমকালো। মুম্বাইয়ের বিখ্যাত লালবাগচা রাজা প্রতিমার প্রথম দর্শন গতকাল থেকেই ভক্তদের মন কাড়ছে। পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এ বছর অনেক প্যান্ডালে প্লাস্টার-অফ-প্যারিসের পরিবর্তে মাটি ও পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি প্রতিমা ব্যবহার করা হচ্ছে। উৎসবের উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়েছে পুণের দাগডুশেঠ হালওয়ের গণপতি থেকে শুরু করে গণেশ গলির প্রতিটি পাড়ার প্যান্ডালে।
এ বছর মহারাষ্ট্র সরকার এই উৎসবকে ‘রাষ্ট্রীয় উৎসব’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, যাতে সামাজিক ঐক্য ও প্রশাসনিক তৎপরতা দুই-ই আরও সুদৃঢ় হয়। পুরো উৎসব চলবে ২৭ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অনন্ত চতুর্দশীর দিনে মহা-আনন্দের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে এই পূণ্যোৎসবের।
ঐতিহাসিকভাবে, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বাল গঙ্গাধর তিলক এই উৎসবকে সর্বজনীন রূপ দেন, যাতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণেশ চতুর্থী প্রতিষ্ঠিত হয়। আজ সেই ধারাই বহমান, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি আর ভক্তি মিলেমিশে এক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে।
পুরাণ মতে, চতুর্থীর দিনে চাঁদ দেখা অশুভ বলে মনে করা হয়, তাই ভক্তরা এই নিয়ম পালন করছেন। অন্যদিকে, ভক্তি আর আবেগে ভরপুর ভক্তদের কণ্ঠে একটাই স্লোগান—“গণপতি বাপ্পা মোরিয়া, পুধ্চ্যা বরশি লভকর বা!” অর্থাৎ, আগামী বছরে আবার ফিরে এসো বাপ্পা।
গণেশ চতুর্থী কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতির ঐক্য ও সম্প্রীতির এক জীবন্ত প্রতীক, যা কোটি মানুষের হৃদয়ে আনন্দ, বিশ্বাস ও ভক্তির আলো জ্বালিয়ে রাখে।


