ঢাকা ও ইসলামাবাদ: ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্ক নতুন করে চালু হয়েছে। পাকিস্তান থেকে সরাসরি চাল রফতানি শুরু হওয়াকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ৫৪ বছর পর অর্থনৈতিক সহযোগিতার এই পুনরারম্ভ নিঃসন্দেহে আঞ্চলিক বাণিজ্যে ইতিবাচক সঙ্কেত বহন করছে।
তবে অর্থনৈতিক যোগাযোগের পাশাপাশি দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক এখনও অতীতের ক্ষত বহন করছে। সাম্প্রতিক ঢাকায় সফরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঈশাক ডার দাবি করেন যে, ১৯৭১ সালের ঘটনাগুলো “১৯৭৪ এবং ২০০২ সালে সমাধান হয়েছে।” কিন্তু বাংলাদেশ এই বক্তব্য দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে জানায়—১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রশ্ন এখনও সমাধান হয়নি, এবং “৫৪ বছরের সমস্যা একদিনে মুছে দেওয়া সম্ভব নয়।”
এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানের কাছ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণ দাবি বহাল রয়েছে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সম্পদ ফেরত আনার দাবিও জোরালোভাবে উত্থাপিত হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সরাসরি ব্যবসা ও কূটনৈতিক আলোচনার পুনরারম্ভ নিঃসন্দেহে সম্পর্ক উষ্ণ করার একটি পদক্ষেপ, তবে অতীতের অমীমাংসিত ইস্যুগুলি সমাধান না হলে এই অগ্রগতি স্থায়ী রূপ নেবে না। তাই নতুন অর্থনৈতিক অধ্যায়ের সূচনার পাশাপাশি দুই দেশের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ইতিহাসের দায় মেটানো।

