সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি একটি ভিডিও রিল ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে—রাতে একটি সড়কের মাঝখানে দাঁড়ানো পুলিশের গাড়ির সামনে এক মহিলা নাচছেন, আর দু’জন কর্মরত পুলিশকর্মী তা দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন। ভিডিওটি ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে, ইতিমধ্যেই লাখো মানুষ এটি দেখেছেন এবং হাজার হাজার প্রতিক্রিয়া, মন্তব্য জমা পড়েছে।
তবে মূল বিতর্ক তৈরি হয়েছে পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা ঘিরে। কমেন্টে সাধারণ মানুষ একদিকে মজা পাচ্ছেন, অন্যদিকে পুলিশের এভাবে দাঁড়িয়ে রিল উপভোগের বিষয়টি উল্লেখ করে করে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন এবং নানান মন্তব্য করেছেন।
এই ঘটনাটি কেবল হাস্যরসের উপাদান নয়, বরং সমাজে একটি গভীর প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছে—সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব আমাদের সরকারি দায়িত্ববোধকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? বর্তমানে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে রিল বানানো ও ভাইরাল হওয়া যেন এক ধরনের প্রতিযোগিতা। কিন্তু যখন সেই প্রতিযোগিতা জননিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত পেশাদারদের আচরণকে প্রভাবিত করে, তখন তা ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
প্রশাসনিক দিক থেকেও এই ভিডিওটি গুরুত্ব পাচ্ছে। কারণ পুলিশের পোশাক ও গাড়ির উপস্থিতি মানেই তা রাষ্ট্রের প্রতীক। সেখানে যদি দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ছবি দেখা যায়, তবে তা গোটা বাহিনীর ভাবমূর্তিকেই আঘাত করে।
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, এ ধরনের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার "ভাইরাল সংস্কৃতি"-র এক উল্টোদিককে তুলে ধরে। কিছু মুহূর্তের বিনোদন হয়তো মানুষকে আনন্দ দেয়, কিন্তু তার ফলাফল যদি প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে, তবে সেটি বিপজ্জনক।
শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন থেকে যায়—আমরা কি সোশ্যাল মিডিয়ার বিনোদনকে দায়িত্বের ঊর্ধ্বে রাখছি? নাকি এটিই নতুন প্রজন্মের কাছে "স্বাভাবিক" হয়ে দাঁড়াচ্ছে?