Select language to read news in your own language


Like SatSakal Facebook Page to stay updated.

বিশ্ব দরবারে দুর্গাপুজো: ইন্দোনেশিয়া


পিয়া রায়

দুর্গাপূজা, বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উৎসব, আজ আর শুধুমাত্র বাংলার সীমানায় আবদ্ধ নয়। এটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে, যেখানে প্রবাসী বাঙালিরা ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি নব প্রজন্মকে নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত রাখার প্রয়াসে এই উৎসব পালন করে আসছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ দেশ ইন্দোনেশিয়া—যার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি রয়েছে—সেই দেশেও দুর্গাপূজার আয়োজন হয়ে থাকে, যা এক দৃষ্টান্তমূলক সাংস্কৃতিক মিলনের প্রতিফলন।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয় ও বাংলাদেশি বাঙালিরাই মূলত দুর্গাপূজার আয়োজন করে থাকেন। এখানে পূজার মূল আয়োজন হয়ে থাকে ভারতীয় দূতাবাস এবং বিভিন্ন বাঙালি সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে। যদিও ইন্দোনেশিয়ার জনসংখ্যার বৃহৎ অংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী, তবুও এই দেশ তার ধর্মীয় সহনশীলতা ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের জন্য পরিচিত। তাই হিন্দু উৎসব উদযাপনে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ নেই, বরং সরকারিভাবেই অনেক জায়গায় এই ধরনের উৎসবের অনুমতি ও নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।

একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত হল বালির দ্বীপ, যা ইন্দোনেশিয়ার একমাত্র হিন্দু-অধ্যুষিত অঞ্চল। যদিও এখানে দুর্গাপূজার প্রচলন নেই বললেই চলে, তবে বালির হিন্দু সংস্কৃতি ভারতের প্রাচীন হিন্দুধর্মের একটি ভিন্ন শাখা হিসাবে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যেও জাভা ও সুমাত্রার শহরগুলোতে ভারতীয় দূতাবাস বা স্থানীয় ভারতীয় কমিউনিটির সহায়তায় দুর্গাপূজা বেশ গুরুত্ব সহকারে পালিত হয়।

পূজার সময় প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে দেখা যায় এক অসাধারণ ঐক্য। সকলে মিলে মণ্ডপ সাজানো, প্রতিমা স্থাপন, অঞ্জলি, সন্ধিপুজো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মহাপ্রসাদের আয়োজন করে। অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় ইন্দোনেশিয় নাগরিকরাও উৎসবের আনন্দে সামিল হন, যারা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী। ফলে এটি কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, হয়ে ওঠে দুই দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের এক উজ্জ্বল মঞ্চ।

বিশ্বায়নের যুগে প্রবাসে থাকা বাঙালিদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনকে অটুট রাখতে দুর্গাপূজার মতো উৎসব অমূল্য ভূমিকা পালন করে। ইন্দোনেশিয়ার মতো বৈচিত্র্যময় ও ধর্মনিরপেক্ষ দেশে দুর্গাপূজার উপস্থিতি শুধু প্রবাসী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্যের এক বাস্তব নিদর্শন। সুতরাং বলা যায়, ইন্দোনেশিয়ায় দুর্গাপূজা আয়োজন একটি জীবন্ত প্রমাণ যে, ধর্ম, সংস্কৃতি এবং উৎসব—সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বজনীন হতে পারে।

ছবি: সংগৃহীত

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon