কলকাতা, ২০ আগস্ট ২০২৫ — আজ সংসদে পেশ হয়েছে বিতর্কিত ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল, আর সেই নিয়েই তীব্র প্রতিবাদে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো। তিনি ফেসবুকে বিস্ফোরক অভিযোগ করে লিখেছেন— “BLACK DAY, BLACK BILL”।
ফেসবুক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, এই বিল ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য মৃত্যুবার্তা। তাঁর অভিযোগ, বিলটি কেবল আদালতের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া নয়, বরং ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোকেই ধ্বংস করার প্রচেষ্টা। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন— “এই বিল কোর্টের সাংবিধানিক ভূমিকা কেড়ে নিতে চাইছে। ন্যায়বিচারের মূল কাঠামো ও কেন্দ্র-রাজ্যের ফেডারেল ভারসাম্য ভেঙে দিতে চাইছে। এটি হিটলারি মানসিকতার ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ।”
তিনি আরও জানান, বিশেষ ইন্টেন্সিভ রিভিশন (SIR)-এর নামে ভোটাধিকার খর্ব করা হচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও ফেডারেলিজমের ওপর সরাসরি আঘাত। তাঁর বক্তব্য— “আদালতকে দুর্বল করা মানে জনগণকে দুর্বল করা। বিচার চাইবার অধিকার কেড়ে নেওয়া মানে গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়া। এই বিল পাস হলে ভারতের সংবিধান শাসনের মৃত্যু ঘটবে।”
তৃণমূল সুপ্রিমো আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই বিল কার্যকর হলে দেশের আইন থাকবে না স্বাধীন আদালতের হাতে, বরং যাবে “vested interests”-এর কবলে। তিনি এই বিলকে আখ্যা দিয়েছেন “super-Emergency”-এর থেকেও ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ।
পোস্টে তিনি কেন্দ্রের উদ্দেশে অভিযোগ করেন— ইডি, সিবিআইয়ের মতো সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে রাজ্য সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করার পথ খুলে দিতে চাইছে এই বিল। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে একতরফা ক্ষমতা তুলে দেওয়ার এই উদ্যোগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে।
তাঁর কথায়, “এটি সংস্কার নয়, এটি পশ্চাদগমন। এটি ভারতের গণতন্ত্রকে একদলীয়, একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমাদের প্রতিরোধ করতেই হবে। এই দেশ গণতন্ত্র বাঁচাতে আজ রাস্তায় নামতে প্রস্তুত।”
দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই তীব্র আলোড়ন তুলেছে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য। বিরোধী শিবিরের অন্যান্য দলও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হবে কি না, এখন সেটাই নজর কাড়ছে।
রাজনীতির মহল মনে করছে, ১৩০তম সংশোধনী বিল যদি সংসদে পাশ হয়, তবে তা ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে— তবে কোন দিকে, তা নিয়েই তৈরি হচ্ছে প্রবল বিতর্ক।