যোগমায়া আচার্য
আজকের দিনটি নিছক কোনও ক্যালেন্ডারের পাতায় চিহ্নিত দিবস নয়—Perfect Family Day এক গভীর অনুভব, যা আমাদের পরিবারের সত্যিকারের গুরুত্ব এবং একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানোর অপরিহার্যতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। জীবনের ব্যস্ত ছন্দে হারিয়ে যেতে যেতে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই, জীবনের আসল শক্তি এবং ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু হল পরিবার। এই দিনটি সেই ভুলগুলোকে শুধরে নেওয়ার, কাছের মানুষদের আরও একবার জড়িয়ে ধরা এবং বলার—"তোমরা আছো বলেই জীবনটা পরিপূর্ণ।"
একটি ‘পারফেক্ট’ পরিবার আসলে কোনো নিখুঁত কাঠামো নয়, এটি হল ভালোবাসা, সহানুভূতি, ত্যাগ এবং বোঝাপড়ার সমন্বয়ে গঠিত এক সম্পর্কের মজবুত বন্ধন। কেউ কারো জন্য নিখুঁত হয় না, কিন্তু যখন কেউ কাউকে গ্রহণ করে সকল অসম্পূর্ণতাসহ, তখন সেই পরিবার হয়ে ওঠে নিখুঁত। বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদু-ঠাকুরমা বা এমনকি আপন করে নেওয়া বন্ধুরাও এই পারিবারিক আবেগের অংশ হতে পারে।
আজকের এই দিনে নিজেদের চারপাশে তাকিয়ে দেখার সুযোগ আসে—আমাদের জীবনে পরিবার কী ভূমিকা পালন করে। ছোটবেলায় মা'র আদর, বাবার কঠোর শাসনে লুকিয়ে থাকা যত্ন, ভাই বা বোনের সঙ্গে কেঁদে নেওয়া হাসিমুখ, দাদু-ঠাকুমার গল্পে ডুবে যাওয়া, কিংবা ঘরের ডাইনিং টেবিলে একসঙ্গে বসে খাওয়া—এসবই তো পারফেক্ট ফ্যামিলির ছবির টুকরো টুকরো দৃশ্য।
এই দিনটি একইসঙ্গে সমাজের কাছে এক বার্তাও বয়ে আনে—নির্মল সম্পর্কের যত্ন নিতে শিখুন। কেবল উপহার বা দামি উপকরণ নয়, সময়ই হল সবচেয়ে মূল্যবান উপহার। প্রযুক্তির দৌড়ে আমরা যেন হারিয়ে ফেলি না একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা, মন খুলে হাসা, কিংবা নিঃশব্দে পাশে দাঁড়ানোর ক্ষমতা।
পারিবারিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে হলে দরকার প্রতিদিন ছোট ছোট যত্নের ছোঁয়া। Perfect Family Day আমাদের সেই অভ্যাস গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করে। একসঙ্গে সিনেমা দেখা, একবেলা একসঙ্গে খাওয়া, পুরোনো ফটো অ্যালবাম দেখার মতো ছোট অভ্যাসগুলোই ভবিষ্যতের বড় ভালোবাসার ভিত্তি।
এই দিনে হয়তো কোনও উৎসবের আলাদা আয়োজন হয় না, কিন্তু প্রতিটি ঘরে হৃদয়ের উৎসব শুরু হতে পারে, যদি আমরা আজ থেকেই সিদ্ধান্ত নিই—পরিবারকে শুধু ভালোবাসব না, ভালোবাসাটা প্রকাশও করব। কারণ, শেষ পর্যন্ত পারফেক্ট ফ্যামিলি কোনও স্বপ্ন নয়—এটি ভালোবাসার এক নিরবিচ্ছিন্ন প্রয়াস।