গুসকরা: আবার বিতর্কে রামনগর হাইস্কুলে গাছ বসানো নিয়ে! বিধায়ক এসেছে বলে সে অনুষ্ঠানে এলে না রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান! আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের বিপক্ষ গ্রুপের রয়েছে রামনগর অঞ্চল তৃণমূলের নেতারা। তারা আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সেখ আব্দুল লালনের অনুগামী বলে পরিচিত! ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযোগে জেরবার বিধায়ক! আউশগ্রাম বিধানসভায় তার তেমন কোনো সংগঠন নেই, তিনি এলাকার গুণ্ডা মাফিয়াদের নিয়ে ঘোরেন সে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে বার বার তোলেন আউশগ্রাম ২ নং ব্লক তৃণমূলের এক অংশের তৃণমূলের কর্মী, নেতা, সমর্থকরা। সে নিয়ে কোনো হেলদোল নেই! অবশ্য বিধায়কের অনুগামীরা নিজেদের আস্ফালন দেখিয়েই যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার নিজের মতো করে আউশগ্রাম বিধানসভার বিভিন্ন জায়গায় এক দল লোক নিয়ে ঘুরে বেড়ান বলে অভিযোগ করেন ব্লক তৃণমূলের নেতারা। এদিকে আউশগ্রাম ২ নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো ঘোষিত মিটিং, মিছিলে থাকেন না বলে অভিযোগ অপর গোষ্ঠীর! শুধু তাই নয়, তারা আরও অভিযোগ করেন যে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া বিভিন্ন সরকারি কাজ ইচ্ছে মতো জেলার একমাত্র জঙ্গলমহলের আউশগ্রাম ২ নং ব্লকের বিভিন্ন এলাকা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আউশগ্রাম ১ নং ব্লক ও গুসকরা শহরে করাচ্ছেন সে নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে এলাকায়!
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ, সাজা পুতুলের মতো এলাকার একদল কুখ্যাত দুস্কৃতীদের নিয়ে তিনি ঘুরে বেড়ান তিনি। মহিলারা তার অফিসে যেতে পারে না। ভয় পায়।'
অভিযোগ শনিবার গাছ গ্রুপের একটি অনুষ্ঠানে হঠাৎই আউশগ্রাম ২ নং ব্লকের শতবর্ষ প্রাচীন রামনগর হাইস্কুলে বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার এসে পৌঁছাতেই শুরু হয় বিতর্ক। সেখানে ছিলেন অসুস্থ পদ্মশ্রী শিক্ষক সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদ সদস্যা কৃষ্ণা বাগও। সেই অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি রামনগর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো নেতা, কর্মীকে! এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে, রামনগর অঞ্চল তৃণমূলের নেতারা। অঞ্চল সভাপতি আসগর সেখ বলেন, বিধায়ক কয়েক জন বিচ্ছিন্ন, কুখ্যাত আসামিদের নিয়ে শনিবার সকালে শতবর্ষ প্রাচীন স্কুলে আমাদের না জানিয়ে, পঞ্চায়েতকে না জানিয়ে গাছ লাগাতে এসেছিলেন! জানিয়ে এখানে এলে রামনগরের উন্নয়ন নিয়ে মানুষ প্রশ্ন করত সে ভয়েই তিনি লুকিয়ে এসেছিলেন! এই দশ বছরে তিনি কি করেছেন রামনগরের প্রশ্ন করত মানুষ। আসলে ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির কমিটিও বিধায়ক নিজের মতো করে, একই গ্রামের পাঁচ জনের নাম পাঠিয়ে করেছে। এলাকার নেতাদের কোনো মতামত ছিল না তাতে! সে নিয়েও পাঁচ সাতটি গ্রামে ক্ষোভ রয়েছে।'
রামনগরে শতবর্ষ প্রাচীন নাটকের ক্লাবের সম্পাদক তথা শিক্ষক শিবাজী মিত্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের শতবর্ষ প্রাচীন নাটকের ক্লাব রামনগর বান্ধব সমিতিকে একটি কাজ দিয়েও বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার তা করেননি। তুলে নিয়ে গেছেন অন্যত্র! উনি নোংরামি করেছেন আমাদের নিয়ে। রামনগরের মানুষ উনাকে আর তেমন সম্মান করে না।'
রামনগর হাইস্কুলের এদিনের এই গাছ বসানোর কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আউশগ্রাম ২ ব্লকের বিডিও অফিসে ভাঙ্গচুর করা আসরুল হক মণ্ডল ওরফে হীরা সেখ। শিক্ষার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই! তিনি বালি কারবারিতে যুক্ত বলে অভিযোগ রামনগরের প্রধানের।
রামনগরের উপপ্রধান সেখ জিয়াউল হক বলেন, আমাদের বিধায়কের মতিভ্রম হয়েছে। বিজেপি থেকে আসা কয়েক জন দুস্কৃতীকে নিয়ে, যারা কিছু দিন আগে ব্লক অফিসে ভাঙ্গচুুরসহ বিডিও কে মারার অপরাধে জেল খেটে এসেছে, তাদের নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো অনুষ্ঠানে গিয়ে গাছ বসাচ্ছেন। সে অনুষ্ঠানে গেলে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে ভেবে আমরা এই অনুষ্ঠানে যায়নি।'