সোমনাথ চৌধুরী
জল গড়িয়েছে অনেকটা পরীকায়ার জেরে একাকার কাণ্ড।স্ত্রীকে তাঁর বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে স্বামী তাঁর প্রেমিকাকে এনে ঘরে লুকিয়ে রেখেছিল। মায়ের নজরে আসার পর ঘটনার প্রতিবাদ করেন। ছেলে তাঁর কৃতকর্মে কোথায় লজ্জিত হবে তা নয় বরং তার অসুস্থ মাকে বেধড়ক মারধর করল ছেলে প্রকাশ্যেই। এমনকি ছেলে তাঁর মায়ের গলা টিপে খুনের চেষ্টা করেও বলে অভিযোগ। নিজের প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয় মাকে। প্রতিবেশীদের সাহায্যে বালুরঘাট থানায় উপস্থিত হয়ে মা তাঁর ছেলে ও তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ।
বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দুর্গাপুর এলাকার ওই বাসিন্দা শ্রমিকের কাজ করেন ভিনরাজ্যে । এলাকায় একটি খাবারের দোকান করে কোনওরকমে সংসার চালান তাঁর অসুস্থ স্ত্রী । দম্পতির তিন ছেলে, তাঁরা সকলেই আলাদা থাকেন। অভিযুক্ত দম্পতির বড় ছেলে পাশের জমিতে স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে বাড়ি করে থাকে, দিল্লিতে স্ত্রীর বাপের বাড়ি। তাদের বিয়ে হয়েছে ১১ বছর, ওই মহিলা একদিনও তাঁর বাপের বাড়িতে যাননি এই সময়কালে মধ্যে। ওই মহিলার ভাই কিছুদিন আগে দিল্লি থেকে দিদির বাড়িতে আসেন, এরপর তিনি দিদিকে দিল্লিতে নিয়ে যান।
অভিযোগ, তারপরই নিজের প্রেমিকাকে বাড়িতে নিয়ে আসে ওই মহিলার স্বামী। বৃহস্পতিবার সকালে সে কাজে চলে যায়, প্রেমিকাকে ঘরে রেখে সে তাতে তালা মেরে গিয়েছিল। এদিন ওই ঘরে নড়াচড়া টের পান কীর্তিমান ছেলের মা ।তিনি চিৎকার শুরু করেন ঘরে চোর ঢুকেছে মনে করে। চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে জড়ো হন প্রতিবেশীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোটা ঘটনাটি সবার সামনে পরিষ্কার হয়ে যায়।হইহট্টগোল শুনে কীর্তিমান ছেলেও বাড়িতে আসে। মা ছেলেকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন আর এই বিষয়টি ছেলে সহজে মেনে নেয়নি। সঙ্গে সঙ্গে ছেলে মাকে কিল, লাথি ও চড় মারতে শুরু করে সবার সামনে, মারধরের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মা।
পরে তিনি জানান ,' প্রচন্ড মারধর করেছে আমাকে ছেলে, আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছিলে গলা টিপে ধরে। মারধরের সময় ছেলেকে মদত দিচ্ছিল ওর প্রেমিকা। কোনওরকম ভাবে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিই, পরে থানায় অভিযোগ জানাই।'
শাশুড়ির কাছে খবর পাওয়ার পর দিল্লি থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন ছেলের স্ত্রী। স্বামী এমন কোনও কাজ করতে পারেন তাঁর অনুপস্থিতিতে তা তিনি বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না।
অন্যদিকে, ঘরে যে প্রেমিকাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল তার একটি ১৬ বছর বয়সি মেয়ে রয়েছে। প্রেমিকার দাবি তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েই ঘরে এনে তুলেছিল। গোটা ঘটনাটিকে নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে।