সোমনাথ চৌধুরী :
বাঙালিদের উপর অত্যাচার ও বাংলা ভাষার অপমান নিয়ে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে ঘিরে তুলকালামকান্ড।তুমুল হট্টগোল বিজেপি বিধায়কদের।বহিস্কার বিজেপির মূখ্যসচেতক শংকর ঘোষ।বিজেপি বিধায়কদের ধস্তাধস্তি ও কাগজ ছুড়ে ফেলা সব মিলিয়ে বেনজির পরিস্থিতি তৈরী হয় রাজ্য বিধানসভায়।মুখ্যমন্ত্রী বলেন ,"ধিক্কার জানাই আমি"। জেনেশুনেই এরা ,যাতে মানুষ শুনতে না পারে আমার কথা ,আমার কন্ঠরোধে ওদের এই কর্মসূচি।সকালে ওরা ছিল না। আমার আসার কিছুক্ষন আগে ,ওরা এসেছে।যখন নাম ডেকেছে, ওরা কিন্তু তখন বক্তব্য রাখেনি।যেই নিজেদের বলা হয়ে গিয়েছে ,ওমনি অশান্তি।আমি বলবই, আমার কন্ঠরোধে করা যাবে না।"
বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালিদের হেনস্থা ও বাংলা ভাষার অপমানের অভিযোগ এনে প্রতিবাদে স্বর হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে, বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য রাখার কথা ছিল।বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে তখন ছিলেন না তিনি।তখন স্শিকার মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখতে বলেন।কিন্তু এরই মাঝে অগ্নিমিত্রা পাল বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে পৌঁছান।যাতে অগ্নিমিত্রা পালকে বলতে দেওয়া হয় ,বিজেপি বিধায়কেরা চিৎকার করতে থাকেন।
মুখ্যমন্ত্রীও তখন অনুরোধ করেন স্পিকারকে ,যাতে অগ্নিমিত্রাকে বলতে দেন তিনি।সেই অনুমতিও দেন বিধানসভার স্পিকার,কিন্তু বক্তৃতার সময় কমিয়ে তিনি।তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সময়ের পর।বক্তব্য রাখতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।মমতা ব্যানার্জি বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ নিয়ে শুরু করেন বক্তব্য ,তখনই শংকর ঘোষ স্লোগান শুরু করেন।তারপর স্পিকার তাঁকেও একাধিকবার সতর্ক করে পরে সাসপেন্ড করেন।তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিধানসভায়।নিজের আসনে অনড় ছিলেন শংকর ঘোষ।তাঁকে বের করার চেষ্টা করেন মার্শাল সহ বিধানসভার নিরাপত্তারক্ষীরা,তা নিয়েই শুরু হয় ধস্তাধস্তি।
মুখ্যমন্ত্রী ফের বলতে ওঠেন তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই।বিজেপির উদ্দেশ্যে বলেন, "একটা দল স্বাধীনতার পর ,যাদের কোনও ভূমিকা ছিল না স্বাধীন করার।তারাই এখন সবথেকে বড় ডাকাত দেশের। ভাগাভাগি করেন মানুষ মানুষে।বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিলেন ব্রিটিশদের সাথে মিশে।সাম্প্রদায়িক বিভাজন করেছিলেন।বিজেপির কেউ নির্বাচিত হবে না আগামী দিন ,স্বৈরাচারী শক্তি।"
মমতা ব্যানার্জীর আরো সংযোজন ," বাংলাভাষীদের উপর সব জায়গায় অত্যাচার করছে।স্বাধীনতা এনেছে যে বাঙালি।ভোট দেবে না মানুষ আপনাদের।অস্ত্র দিয়ে, টাকা দিয়ে ও নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ভোট করিয়ে নির্বাচন জেতে। আজ ভয় পেয়েছে।"
মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে বাংলা বিরোধী তকমা দেন।স্লোগান তোলেন, 'বিজেপি হাঁটাও, দেশ বাঁচাও।' এছাড়াও এদিন তিনি বিজেপি-তে যাওয়া বিধায়কদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে কটাক করতে থাকেন।জানিয়ে রাখি ,এদিন স্পিকার তুমুল অশান্তির জেরে শঙ্কর ঘোষ ,মিহির গোস্বামী ও অগ্নিমিত্রা পালকে সাসপেন্ড করেন।