নরেন্দ্রনাথ কুলে
ইদানীং রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের সীমা আছে এমন কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না । যদিও কখনো কখনো তার ব্যতিক্রমের ছবি হলে প্রচারের অন্ত থাকে না । তবে সম্প্রতি দেশের দুটি বড় রাজনৈতিক দল বিজেপি ও কংগ্রেসের রাজনৈতিক সংস্কৃতি তা বলছে না । যদিও আজকের রাজনৈতিক দলের সংস্কৃতি নিয়ে কোন দলই গর্ব করতে পারে না । তবে দলের নেতা ও কর্মীবৃন্দের কোন অপ্রীতিকর ঘটনায় বিবৃতি থাকে যে দল এসব সমর্থন করে না । রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেতা ও দলের আচরণেই পরিষ্কার হয় । কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ করে শাসক রাজনীতির নেতা ও কর্মীদের আচরণ বলে দেয় তাদের ঔদ্ধত্যের সংস্কৃতির চেহারা । আজকের রাজনৈতিক দল আদর্শের চর্চা দিয়ে নেতা ও কর্মীদের আকৃষ্ট করে না । তাই তো নেতাদের ব্যক্তিগত কুৎসা, কোন্দল, ক্ষমতায় দলের সংস্কৃতি প্রভাবিত হয় ।
সম্প্রতি বিজেপির কর্মীবৃন্দ পাটনা, কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে কংগ্রেসের নেতার আচরণের প্রতিবাদে কংগ্রেসের দলীয় অফিসে তান্ডব চালিয়েছে । কংগ্রেস একটা ঐতিহাসিক দল হিসেবে নেতাদের গৌরবান্বিত করলে বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিরোধিতার ভাষায় আক্রমণ স্বাভাবিক হত । কিন্তু তা হয়নি বলে অভিযোগ, যার প্রতিবাদে বিজেপির নেতা কর্মীবৃন্দ তান্ডব চালাতে দ্বিধা করেনি । তথাকথিত শক্তিধর এই দুটি দলের পারস্পরিক আচরণ স্বাভাবিক নয় । শাসক রাজনীতির হিংসাত্মক বাংলার মানুষের কাছে নতুন নয় । ভোটে শাসক দল পরাজিত হলে তার নেতাকর্মীবৃন্দ দলীয় অফিসে বসতে ভয় পায় । এমনকি দলীয় অফিসটাই দখল হয়ে যায় জয়ী দলের কর্মীদের কাছে । এই দখলের চেহারায় সুস্থ সংস্কৃতির চেহারা থাকে না ।
পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস অফিস বিজেপির গুন্ডাবাহিনী এখনই যেভাবে ভাঙচুর করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে এই প্রশ্নটি এসে যায় । বিজেপি দল এখনও বাংলার ক্ষমতা দখল নিতে পারেনি । বাংলার প্রশাসন দখল না করে যদি বিজেপির এই চন্ডাল চেহারা হয়, তাহলে বাংলা দখল করলে তার চেহারা কেমন হতে পারে এই কি তার পূর্বাভাস ।
শাসক রাজনীতি কিংবা বিরোধী রাজনীতির আজকের চর্চিত সংস্কৃতি সুস্থ সামাজিক পরিবেশের পক্ষে, এ শুধু কথার বেড়াজালে সীমাবদ্ধ থাকা ছাড়া আর কিছু নয় ।