নরেন্দ্রনাথ কুলে
বাংলার শিক্ষা দুর্নীতিতে অবশেষে অযোগ্য প্রার্থীদের নাম ঘোষিত হল । মহামান্য আদালতের নির্দেশে এই কাজটি স্কুল সার্ভিস কমিশন করলেন । শিক্ষা দুর্নীতি মামলার শুরুতে যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথকীকরণের মহামান্য আদালতের নির্দেশ থাকলেও রাজ্য কোন না কোনভাবে তা এড়িয়ে গেছে । তবে এই কাজটি আগেই করতে পারলে শিক্ষা দুর্নীতির মামলা থেকে প্রকৃত যোগ্য প্রার্থীদের হয়তো সুরাহা হতে পারত । কিন্তু প্রকাশিত এই তালিকা দিলেই দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগ হবে এর নিশ্চয়তা তৈরি হয়নি । তবে অযোগ্যপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশে এটা প্রমাণ হল যে শিক্ষকপদে নিয়োগে দুর্নীতি আরো পরিষ্কার হল । দুর্নীতি স্পষ্ট, অথচ তা ধোঁয়াশাপূর্ণ রাখার যতরকম কৌশল রাজ্য করেছে । যদিও ধোঁয়াশাপূর্ণ বলাটা ঠিক হবে না । কারণ অযোগ্যদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে রাজ্যের মুখোশ একেবারেই খুলে গিয়েছিল । একটা মুখোশ খুলে যায়, আর একটা মুখোশের আড়ালে যেতে হয় । তবু শেষ রক্ষা হল না । তবে এই অবস্থায় অযোগ্যরা যেভাবে যোগ্য হয়ে উঠেছিল তা পরিষ্কার হয়ে যাবে, যেখানে দুর্নীতির শেষ গন্তব্য খুঁজে পাওয়া যেতে পারে । একটা কথা পরিষ্কার হচ্ছে যে শাসক দলের স্নেহধন্যরা এই পথে অযোগ্য থেকে যোগ্য হয়ে উঠেছিল ।
এই মূহুর্তে আরো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে চলেছে । প্রকাশিত অনেক অযোগ্য পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাতে এগিয়ে আসবে । যার হুঙ্কার মৃদুশব্দে কোথাও উচ্চারিত হচ্ছে । ফলত আগামী ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বরে যে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আবারো ব্যাহত হতে পারে । কিন্তু অযোগ্য প্রকাশিত হল যখন, তখন যোগ্যদের পরীক্ষা দিতে হবে কেন ?
কেন অযোগ্য -এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে প্রশাসন প্রমাণ করতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত নয় । কারণ 'ওএমআর' সিট বস্তুত অক্ষত নেই বলে আগেই বলা হয়েছিল । তাহলে অযোগ্য প্রমাণে প্রশাসন সফল না হলে আবার জটিলতা সৃষ্টি হবে । পরিস্থিতি সেই দিকেই এগিয়ে চলেছে । পরিস্থিতি যে দিকেই এগিয়ে যাক, যোগ্য প্রার্থীরা যোগ্য সম্মান পেলে একটুকরো আশার আলো সমাজে দেখা যেতে পারে । যদিও শাসক দলীয় পুষ্ট প্রশাসন বারেবারে সেই আলোটাকে নিভিয়ে দিতে চেয়েছে । মহামান্য আদালতের খোঁচায় শুধু সেই আলো জ্বলে উঠলে, অন্ধকার অবস্থার বিদায় ঘন্টা বাজে না ।