রাজ্য রাজনীতিতে ফের নতুন চর্চার সূত্রপাত হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২২ আগস্ট কলকাতায় মেট্রোর তিনটি নতুন রুট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, এটি মুখ্যমন্ত্রীর একটি কৌশলগত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
তৃণমূলের দাবি, কলকাতার মেট্রো সম্প্রসারণ প্রকল্পগুলি মূলত মমতার রেলমন্ত্রীত্বকালে অনুমোদিত ও অর্থায়িত হয়েছিল। দীর্ঘ বিলম্বের পর সেই প্রকল্প উদ্বোধনের কৃতিত্ব কেন্দ্র সরকারের দিকে ঘুরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ফলে তৃণমূল মনে করছে, কেন্দ্রীয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই উদ্বোধনে উপস্থিত থাকলে তাঁদের রাজনৈতিক বার্তা আড়ালে থেকে যাবে।
অন্যদিকে, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর অবিচার ও হয়রানির প্রসঙ্গ তুলে মমতা এই অনুষ্ঠান বয়কটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর মতে, বাঙালিদের সম্মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, আর সেই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়ানো রাজনৈতিকভাবে সঠিক বার্তা দেবে না।
সূত্র আরও জানিয়েছে, অতীতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বিজেপি কর্মীদের আচরণে মমতা বিরক্ত হয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি এড়াতে তিনি এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে নিজেকে সামনে আনবেন না।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই পদক্ষেপ নিছক অনুষ্ঠান বর্জন নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি। বিহার নির্বাচনের প্রাক্কালে বাঙালি আবেগকে জাগিয়ে তুলতে তৃণমূল এখন থেকেই ভোটারদের কাছে বার্তা দিতে চাইছে। স্থানীয় মানুষদের বোঝাতে চাইছে, কেন্দ্রের রাজনৈতিক কৃতিত্বের খেলায় তাঁরা অংশ নেবেন না।
সব মিলিয়ে, ২২ আগস্টের মেট্রো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি এখন কার্যত নিশ্চিত। এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্র–রাজ্য সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে বাঙালি গর্ব, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ও আঞ্চলিক পরিচয়ের প্রশ্নকে নতুন করে সামনে এনে দিল।