চলে গেলেন মণিপুরী নাটকের প্রবাদপ্রতিম নাট্যকার রতন থিয়াম! সংস্কৃতি মহলে শোকের ছায়া
রাধামাধব মণ্ডল লেখক
কলকাতা: তাঁর মৃত্যু ঘিরে শোকস্তব্ধ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসাও! সেখানকার কাঁকসার সাতকাহনিয়ার তেপান্তর নাট্য গ্রামে মাঝে মাঝেই আসতেন ভারতীয় নাটকের প্রবাদপ্রতিম নাট্যজন রতন থিয়াম! ভারতীয় নাট্যজগতে নক্ষত্রপতন! দীর্ঘ অসুস্থতার পর প্রয়াত হলেন নাট্যজন রতন থিয়াম। তাঁকে দেশের এই মুহূর্তের একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার বলে বিবেচনা করা হত। তাঁর মৃত্যুতে নাট্য জগতে শোকের ছায়া। তিনি এই সময়ের একজন শ্রেষ্ঠ নাট্য নির্দেশক বলেও মনে করা হয়। এদেশের 'অবহেলিত' উত্তর পূর্বের একটি রাজ্য মণিপুরের কৃষ্টি, সংস্কৃতি আর তার ঐতিহ্যকে গোটা ভারতের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে ছিলেন নাট্যকার থিয়াম। তাঁর নাটকে মুগ্ধ হয়েছিল সর্বভারতীয় থিয়েটার দর্শকরা। বহু গুণীজন তাঁর ভক্ত ছিলেন। রতন থিয়াম তাঁর সেই মাতৃভূমিকে অশান্ত দেখেই মঙ্গলবার বেলা দেড়টা নাগাদ হঠাৎই ৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন! এদেশের পদ্মভূষণ প্রাপ্ত নাট্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন থিয়াম। এদেশের সেই গুটিকয় পরিচালকদের একজন ছিলেন রতন, যিনি প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যকে নাটকের মাধ্যমে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন দীর্ঘদিনের নাট্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। তাঁর রচিত, নির্দেশিত নাটক লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে। দেশে বিদেশে তাঁর ভক্তের সংখ্যা প্রচুর। থিয়ামের নাটক মণিপুর, সহ সমগ্র ভারতবর্ষের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে মঞ্চস্থ হয়েছে। ভারতীয় নাট্য সাহিত্য মহলে তাঁর অভাব অনুভূব করবে এক শূণ্যতা! থিয়ামের নির্দেশিত 'চক্রব্যূহ', 'উত্তর প্রিয়দর্শী', 'হে নুংশিবি পৃথিবী', 'চিংলোঁ মাপান তাম্পক আমা'-র মতো নাটক থিয়েটার দর্শকরা কখনো ভুলবে না। তিনি একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী, সেই সঙ্গে সঙ্গীতজ্ঞও ছিলেন। তিনি জীবিত অবস্থায় বহুবার এসেছেন কাঁকসার বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতকাহনীয়া গ্রামের তেপান্তর নাট্যগ্রামে। সেখানকার কর্ণধার নাট্যজন কল্লোল ভট্টাচার্যও তাঁকে গুরু জ্ঞানে মানতেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় তিনি তৈরি করেন তেপান্তর নাট্যগ্রাম। আজ সেখানেও শোকস্তব্ধ আর শূণ্যতা!