যোগমায়া আচার্য
প্রতিবছর ১ জুন বিশ্বজুড়ে পালিত হয় World Milk Day বা বিশ্ব দুধ দিবস। ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এই দিনটি ঘোষণা করে, উদ্দেশ্য ছিল—দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের পুষ্টিগুণ, খাদ্যনিরাপত্তা এবং অর্থনীতিতে অবদানের প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করা।
বাংলা সমাজে দুধ শুধুমাত্র একটি খাদ্য নয়, এটি একটি চিরাচরিত স্বাস্থ্যঔষধ, শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার পুষ্টির মূলে দুধের অবদান অনস্বীকার্য। এই দিনটি তাই শুধু একটি উদযাপন নয়, বরং সচেতনতার এক নতুন অধ্যায়।
দুধ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
দুধকে বলা হয় “প্রকৃতির পূর্ণ খাবার”, কারণ এতে রয়েছে—
# ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে
# প্রোটিন: পেশি গঠনে সাহায্য করে
# ভিটামিন ডি, বি১২, রাইবোফ্লাভিন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
# পটাশিয়াম ও ফসফরাস: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
# শিশুদের বৃদ্ধির জন্য এবং বড়দের রোগপ্রতিরোধে দুধ একটি অপরিহার্য উপাদান।
বিশ্বব্যাপী দুধের ভূমিকা
বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮৪০ মিলিয়ন টন দুধ উৎপন্ন হয়। দুধ খামার, দুগ্ধ শিল্প ও রপ্তানি থেকে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্বাহ হয়। ভারতের মতো দেশে, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুধ উৎপাদনকারী, এই শিল্পটি গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকাশক্তি।
ভারতের প্রেক্ষাপটে দুধ
ভারতে দুধ কেবল খাদ্য নয়, এটি একটি সংস্কৃতির অংশ। ‘হলকা দুধ’, ‘ঘি’, ‘দই’, ‘ছানার মিষ্টি’—প্রতিটি খাদ্যদ্রব্য আমাদের ঐতিহ্যের সাক্ষী। দুধ নিয়ে নানা ধর্মীয় আচার, উৎসব, এমনকি বৈজ্ঞানিক গবেষণাও আমাদের সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কীভাবে উদযাপন করা হয়?
# স্কুল, কলেজে সচেতনতা কর্মসূচি
# দুধ বিতরণ ক্যাম্পেইন
# সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার: #WorldMilkDay
# খামার থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সচেতনতামূলক মেলা ও প্রচার
সচেতনতার সময় এখন
বর্তমানে নানা জায়গায় দুধে ভেজাল, রাসায়নিক ব্যবহার ও সংরক্ষণের অভাবে মানুষ দুধ খেতে ভয় পান। তাই বিশ্ব দুধ দিবস আমাদের আহ্বান জানায়—সততা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ের দিক থেকেই।
শেষ কথা
আজকের দিনে আসুন আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করি—
সতেজ ও বিশুদ্ধ দুধ গ্রহণ করব, শিশু ও পরিবারকে ভালো রাখব, এবং দেশীয় দুগ্ধ শিল্পকে সমর্থন করব।
"এক গ্লাস দুধ, এক গ্লাস সুস্থতা!"