Select language to read news in your own language

অবৈধ দখলদারদের POK এর দখলকৃত অংশ সঠিক মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত, এস জয়শঙ্কর




সোমনাথ চৌধুরী

বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (POK) সম্পর্কে ভারতের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছেন, জোর দিয়ে বলেছেন যে এই অঞ্চলটি  ভারতের অন্তর্গত এবং অবৈধ দখলদারদের অধীনে থাকা অঞ্চলগুলি তাদের সঠিক মালিক অর্থাৎ ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

নেদারল্যান্ডের ডাচ সংবাদপত্র "ডি ভলকসক্র্যান্ট"-এর সাথে সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের উপর জোর দিয়ে, উল্লেখ করেছেন যে ১৯৪৭ সালে বিভাজনের সময় জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের সাথে যুক্ত হয়েছিল। "আমাদের অবস্থান হল যে অবৈধ দখলদারদের তাদের অবৈধভাবে দখলকৃত অংশ ফিরিয়ে দেওয়া উচিত এবং সেই সঠিক মালিক আমরাই"।

জয়শঙ্কর দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে তিনি বলেছেন , যে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা  জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে লক্ষ্য করে পহেলগাঁওয়ে একটি সংকীর্ণ ও স্বার্থপর উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় উত্তেজনাকে বাড়নোর লক্ষ্যে করা হয়েছে । এটি একটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ যা ক্ষমা করা বা ন্যায়সঙ্গত বলা উচিত নয়। বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি এ ধরনের প্রথা প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান তিনি। 

কূটনৈতিক দিক থেকে জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে  বলেছেন যে কাশ্মীর সমস্যাটি সম্পূর্ণরূপে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়।তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন । এর সাথে তিনি জাতীয় ঐকমত্য এবং ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির উল্লেখ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সমস্ত বিরোধ দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করা উচিত।
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার জবাবে ভারত ৭ই মে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ টি সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে "অপারেশন সিন্দুর" শুরু করে। এই অভিযানের ফলে জৈশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত ১০০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়।পাকিস্তান সীমান্তের ওপার থেকে গোলাবর্ষণ এবং ড্রোন হামলার চেষ্টা করে। যার ফলস্বরূপ ভারত পাকিস্তানি সামরিক পরিকাঠামোর উপরে আরও হামলা চালায়। ১০ই মে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরের পর আক্রমণ বন্ধ হয়ে যায়। 

নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলির বাইরে, জয়শঙ্কর ভারতের উৎপাদন খাত সম্প্রসারণ এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে আরও গভীরভাবে একীভূত হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়েও আলোচনা করেন।নতুন প্রযুক্তিকে মূল প্রবেশপথ হিসেবে ব্যবহার করে তিনি ইলেকট্রনিক্স, রাসায়নিক এবং ওষুধ সহ আধুনিক পণ্য উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের  গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে বলেন, যে ভারত "নিষেধাজ্ঞা সংস্কৃতি" অনুসরণ করে না, এটিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবে বর্ণনা করে।তার পরিবর্তে, তিনি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ভারতের অগ্রাধিকার এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালনের জন্য ভারতের উন্মুক্ততার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা উভয় পক্ষের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।

পাশাপাশি, জয়শঙ্কর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসনের জন্য ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথাও তুলে ধরেন, দেশটির ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রভাব এবং সম্প্রতি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে জাপানকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। তিনি যুক্তি দেন যে ভারতের অর্থনৈতিক মর্যাদা এবং সক্রিয় আন্তর্জাতিক উদ্যোগ স্থায়ী আসনের জন্য তার দাবিকে মান্যতা দেয় এবং আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই ধরনের সংস্কার ব্যাপক সমর্থন পাবে।

ইউরোপীয় সফরে এস  জয়শঙ্করের বক্তব্যগুলি পাক অধিকৃত কাশ্মীর, সন্ত্রাসবাদ, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে দ্বিপাক্ষিকতা, অর্থনৈতিক চাহিদা এবং বৈশ্বিক কূটনৈতিক চাহিদার বিষয়ে ভারতের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানকে পুনরায় নিশ্চিত করে, একই সাথে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা উন্নয়ন এবং বিশ্ব মঞ্চে ভারতের বর্তমান ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। 
ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon



Tags: