Select language to read news in your own language

পরিবারেই শুরু ভালোবাসা: আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে মানবিক বন্ধনের পুনরুজ্জীবন

 

ছন্দা আচার্য

প্রতি বছর ১৫ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস (International Day of Families)। জাতিসংঘ ১৯৯৩ সালে এই দিনটি ঘোষণা করে, যার মূল উদ্দেশ্য পরিবারকে সমাজের ভিত্তি হিসেবে তুলে ধরা এবং আধুনিক চ্যালেঞ্জের মুখে পরিবার কীভাবে টিকে থাকে ও বিকশিত হয়, সে বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা তৈরি করা।

পরিবারের ভূমিকা

পরিবার আমাদের জীবনের প্রথম পাঠশালা। এখানেই আমরা শিখি ভালোবাসা, দায়িত্ব, শৃঙ্খলা ও সহানুভূতির মূল্য। একজন শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠন, মূল্যবোধের বিকাশ এবং সামাজিক আচরণ শেখার প্রথম ও প্রধান জায়গা হলো তার পরিবার। পরিবারে পাওয়া মানসিক নিরাপত্তা একজন মানুষকে আত্মবিশ্বাসী ও দায়িত্ববান করে তোলে।

আধুনিক জীবনে পরিবারের চ্যালেঞ্জ

তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি, কর্মব্যস্ততা, শহুরে যান্ত্রিক জীবন ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা—এই সব কিছু আজকের পরিবারের উপর এক অদৃশ্য চাপ তৈরি করেছে। অনেক পরিবারেই সদস্যরা এক ছাদের নিচে থাকলেও একে অপরের থেকে মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন। অভিভাবকেরা কর্মস্থলে ব্যস্ত, শিশুরা অনলাইন জগতে নিমগ্ন, প্রবীণরা একাকীত্বে ভোগেন। এসবই পারিবারিক বন্ধনকে দুর্বল করে তোলে।

আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসের গুরুত্ব

এই দিবসটি পরিবার নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ এনে দেয়। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শুধু সম্পর্ক থাকা যথেষ্ট নয়, সেই সম্পর্ককে সজীব রাখার জন্য প্রয়োজন সময়, মনোযোগ ও আন্তরিকতা। এদিনটি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটিতে পারিবারিক মূল্যবোধ, সম্মান ও ভালোবাসা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

ভারতের প্রেক্ষাপটে পরিবার

ভারতের সমাজব্যবস্থায় পরিবার একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। যৌথ পরিবার ব্যবস্থা এখানকার ঐতিহ্য হলেও আধুনিক জীবনে পারমাণবিক পরিবার বেড়েছে। তবুও ভারতীয় সংস্কৃতিতে পরিবার এখনও সামাজিক নিরাপত্তা, মানসিক সমর্থন ও মূল্যবোধের কেন্দ্রস্থল। গ্রামীণ ভারত হোক বা শহুরে জীবন, পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা এখনও দৃঢ়ভাবে রয়ে গেছে।

কীভাবে উদযাপন করা যায়?

পরিবারের সঙ্গে একান্ত সময় কাটানো
একসাথে খাওয়া ও আড্ডা দেওয়া
পুরনো অ্যালবাম বা স্মৃতিচারণ করা
প্রবীণ সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো
শিশুদের পারিবারিক গল্প শোনানো

উপসংহার

পরিবার একটি আবেগ, একটি নিরাপদ আশ্রয়, যেখানে জীবনের সমস্ত চাওয়া-পাওয়া ও ক্লান্তির পরেও আমরা ফিরে যেতে চাই। আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস আমাদের সুযোগ দেয় নতুন করে পরিবারকে উপলব্ধি করার, সময় দেওয়ার ও ভালোবাসা প্রকাশ করার। আসুন, এই দিনে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—পরিবারের প্রতিটি সদস্যের পাশে থাকব, তাদের ভালোবাসব, সম্মান করব এবং সম্পর্কগুলোকে আরও দৃঢ় করে তুলব। কারণ, পরিবারই জীবনের প্রথম ও শেষ আশ্রয়।

 

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon