আর বিপ্লব
ভারতের সাধারণ মানুষ আজ এক কঠিন সময় পার করছে। বাজারে গিয়ে সবজির দামের দিকে তাকালে কেবল চোখ বড় হয় না, মনের মধ্যেও ভয় ঢুকে পড়ে—আর কত? পেঁয়াজ, টমেটো, গ্যাস সিলিন্ডার, চাল, ডাল—কোনোটাই সাধারণের নাগালের মধ্যে নেই। প্রশ্ন একটাই: কেন এই ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি? আর সরকার কী করছে?
অর্থনৈতিক পটভূমি ও বর্তমান অবস্থা
গত কয়েক বছর ধরে ভারতের খুচরো মূল্যস্ফীতির হার (CPI) প্রায়ই ৬%-এর ওপরে থেকেছে, যা রিজার্ভ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার বাইরে। টমেটো ১০০ টাকার ঘরে, পেঁয়াজ ৭০, সরিষার তেল ১৫০—এই বাস্তবতা কেবল শহর নয়, গ্রামেও সমানভাবে ভোগাচ্ছে মানুষকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন, “মূল্যবৃদ্ধি একটি নীরব কর”—এটি আজ আরও প্রাসঙ্গিক। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বর্তমান সরকার কি এই কর লাঘব করতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে?
বিজেপি সরকারের ভূমিকা: প্রতিশ্রুতি বনাম বাস্তবতা
২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি জোর দিয়েছিল “মেহঙ্গাই দাইনি” (মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে দৈত্যিনী) স্লোগানে। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
কিন্তু বাস্তবে—
# পেট্রল ও ডিজেলের দাম এখনো আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমা সত্ত্বেও কমানো হয়নি। করের বোঝা সাধারণ মানুষই বহন করছেন।
# রেশন ব্যবস্থায় প্রাইভেটাইজেশন ও ডাটাবেস নির্ভর অ্যাকসেসের কারণে বহু মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন।
# বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের হ্রাসে চাহিদা কমেছে, উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে, যার ফলেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি ও বিরোধী কণ্ঠ
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরকার যদি প্রয়োজনীয় ভর্তুকি সঠিকভাবে পরিচালনা করত, কৃষিপণ্যের সরাসরি বাজারে হস্তক্ষেপ করত এবং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করত, তাহলে এতটা দাম বাড়ত না। বিরোধীরা দাবি করছে, সরকার কর আদায়ে ব্যস্ত, কিন্তু নাগরিকদের বাঁচাতে উদাসীন।
ভবিষ্যতের পথ ও নাগরিকদের প্রত্যাশা
জনগণ এখন সরকারি ভাষণে নয়, চায় বাস্তব পদক্ষেপ:
# কর হ্রাস করে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমানো
# খাদ্য ও নিত্যপণ্যে ভর্তুকির পুনর্বিন্যাস
# মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বাস্তবিক সহায়তা
এটাই সময় সরকারের মুখ না দেখে আয়নার দিকে তাকানোর—কতটা সত্যিই "সবকা বিকাশ" সম্ভব হয়েছে?
নিউজ ও ফিচার কনটেন্টের
লেটেস্ট আপডেট পেতে সাতসকাল-এর
ফেসবুক পেজ লাইক ও ফলো করুন