বিদ্যাসাগর - রামমোহনের কাছ থেকে শিখে নেবো ভাষা গুলো, কথাগুলো, লেখার হরফ গুলো, বানানগুলো, শব্দ বাক্যগুলো । কথার সুর, ছন্দ, নমনীয়তা, আন্তরিকতা বুঝবো রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র থেকে। পারবারিক , সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সম্পর্কের বন্ধন, টানাপোড়েন, সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে মহীরুহ হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখবো - দেখাবো শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্যের পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে। শিশু ও নারী শিক্ষার পাঠগুলো বুঝে নেবো বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথও , শরৎচন্দ্র থেকে। এঁদের সবার থেকে বুঝবো আমার শিক্ষা আসলে সামাজিক শিক্ষা। তাই, শিক্ষাকে নারী - পুরুষ, জাতপাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, ধনী - গরীব নির্বিশেষে সবার মাঝে থেকে বুঝে নেবো, বুঝিয়ে দেবো। বুঝবো মিলবার, মেলাবার শিক্ষাকে।
সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, সঙ্গীত থেকে বুঝবো মানুষের প্রতি মানুষের আবেদন, সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা, স্নেহ , মায়া, মমতা, দৈনন্দিন দাবী, অনুশাসনের প্রকৃতিগুলো, সীমাবদ্ধতাগুলো। শাসন, শোষণ, অমর্যাদা, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, বঞ্চনা, নিপীড়নের জবাব শিখবো হৃদয় বৃত্তির রাজনীতি থেকে যেটা রাসবিহারী বোস, লালা লাজপত রায়, ভগৎ সিং, মাস্টারদা, সুভাষ বোস, শিবদাস ঘোষ আমাদের সামনে রেখে গেছেন । সকল ধর্মীয় অন্ধতা, কুসংস্কার, জড়তা, সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি মিলবে বিদ্যাসাগর, শরৎচন্দ্র, প্রফুল্লচন্দ্র, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন বোস, পি সি মহলনাবিশ সহ বিজ্ঞানী ও সমাজ বিজ্ঞানীদের থেকে।
দুনিয়ার সকল জ্ঞানকে মেলাবো মার্কসবাদের ভেতরে, মার্কসবাদ বুঝতে বুঝতে, বোঝাতে বোঝাতে। সমাজে সকল অন্যের সূত্র খুঁজবো এখান থেকে, সমাধান সূত্র খুঁজবো এখন থেকে। রাষ্ট্র, দেশ, প্রশাসনকে বুঝবো রুশো, ভলতেয়ার, মনটেস্কু, মার্কস, এঙ্গেলস, লিংকন, লেনিন, স্ট্যালিন, মাও সে তুং, শিবদাস ঘোষের জীবন সংগ্রাম ও গবেষণা থেকে।
নিত্যনৈমিত্তিক শ্রম জীবনের ঘাত - প্রতিঘাতের অভিজ্ঞতা আর উক্ত পূর্বপুরুষদের নির্দেশগুলোকে প্রতি মুহূর্তে মিলিয়ে গড়বো সতেজ জ্ঞানের ভাণ্ডার। সেটায় হবে আমাদের চলবার মূলধন । এই নিয়েই গড়বো সহনশীলতা, ধৈর্য্য, বলিষ্ঠতার দৃষ্টান্তমূলক ক্ষেত্রগুলো। তৈরি করবো অপমান, শোষণ, জুলুম, নিপীড়ন সহ্য করার ক্ষমতা। হতে হবে এযুগের স্পার্টাকাস। কর্ম ক্ষমতা ও সহযোগিতামূলক মননের সীমাহীন শক্তি। একে একে অলস, ভীরু, কাপুরুষ, শয়তান, কূটনীতিক দের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পর্যায়ক্রমে দিতে থাকবো। তারপর আসবে ইতিহাসের সন্ধিক্ষণ। যেদিন কর্মক্ষেত্রগুলো থেকে হাজার হাজার স্পার্টাকাস বেরিয়ে আসবে জ্ঞান ও দৈহিক শক্তির আকর নিয়ে । কর্মগুণেই জুটে যাবে কোটি কোটি শোষিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত, অসহায় দরদী মানুষ । যাঁরা সমালোচনা - আত্মসমালোচনাকে বুঝবে হৃদয় থেকে, কুটকাচালীতে নয়। সমাজে - কর্মক্ষেত্রে সকল আমলাতান্ত্রিক সুঁড়সুড়ি, সন্দেহ, বিদ্বেষ, ঘৃণা, বিচ্ছিন্নতাবাদ এখানে পরাস্ত হবে। লেজ গুটিয়ে দৌড়াবে বীরপুঙ্গব রাষ্ট্রীয় শোষক, আমলা, সেনাসামন্তরা । তখনই বিরাজ করবে কর্মের শান্তি, শান্তির কর্ম। ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণের মুহূর্ত পেতে চাই সকল গুণের অন্বেষণ, গুণের সমাহার সৃষ্টির ব্যক্তি ও সমষ্টিগত লড়াই। এই লড়াইয়ে - সংগ্রামে বৌদ্ধিক ও কায়িক শ্রমের সকল শ্রমজীবী মানুষকে হতে হবে এক মাথার সৈনিক।