নরেন্দ্রনাথ কুলে
সম্প্রতি দুটি ফুটবল প্রতিযোগিতা নিয়ে চর্চা চলছে । দু'টি ট্রফির জন্য আলাদা আলাদা প্রতিযোগিতা । একদিকে 'নরেন্দ্র ট্রফি । আর একদিকে 'স্বামী বিবেকানন্দ ট্রফি' । 'নরেন্দ্র ট্রফি' প্রধানমন্ত্রীর নামে । তাঁর পঁচাত্তর তম জন্মবর্ষ পালনে বিজেপির কর্মসূচি তাঁর নামাঙ্কিত ফুটবল প্রতিযোগিতা । আর তৃণমূল দলের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন স্বামীজীকে স্মরণ করে। ফুটবলের প্রতিযোগিতায় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা । ফুটবলের রাজনীতি নাকি রাজনীতির ফুটবলের । অবশ্যই রাজনীতির। বাঙালির সেরা খেলা ফুটবল আজ রাজনীতির মাঠে । বিবেকানন্দ বলেছিলেন, শুধু গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলা ভালো । এই দুই রাজনৈতিক দল অবশ্য বিবেকানন্দের এ কথায় ফুটবল খেলছে তা বলাই যায় না । যদিও তৃণমূলের ফুটবল তাদের 'খেলা হবে' শ্লোগানের আর এক বহিঃপ্রকাশ হতে পারে । তবে বিজেপির ফুটবল খেলার ঘোষণার পাল্টা ঘোষণা তৃণমূলের এটা নিশ্চিত। ফুটবল খেলার চর্চার মধ্যেই দিয়ে রাজনীতির সংস্কৃতির চর্চায় খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব তৈরি করার লক্ষ্য থাকলে তা সুস্থতার লক্ষণ অবশ্যই। আর যদি ও করছে বলে আমাকেও করতেই হবে সে চর্চা টেকসই হয় না । 'দেখাদেখি চাষ লাগালাগি বাস' ভালোর জন্য হলে অবশ্যই ভালো । কিন্তু এ প্রতিযোগিতা সেই ভালোর জন্য তা কি ?
খেললেই খেলোয়াড় হয় না । খেলোয়াড় হলেই খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব হবে তা নয় । খেলায় হারজিত থাকে । সেই হারজিত খেলায় উত্তেজনা থাকে । সেই উত্তেজনারও এক সুস্থ সংস্কৃতি থাকে যা থেকে বোঝা যায় খেলোয়াড়সুলভ সংস্কৃতি । কিন্তু উত্তেজনায় কখনো হিংসা আশ্রয় পেয়ে যায় । আর তখনই খেলার ইতিহাস কলঙ্কিত হয়ে যায় । তবু খেলার সংস্কৃতি এক সুস্থ পরিবেশ তৈরির একটা অংশ । এই সুস্থ সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে কি এই ফুটবল প্রতিযোগিতা ? তাদের সে কথা জানা যায় না । তবে এই প্রতিযোগিতা-সংস্কৃতির মধ্যে ভোট সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে । আগামী বাংলার বিধানসভা ভোটের প্রাকপর্বের প্রস্তুতি বাঙালির ফুচটবলে। সে চর্চাও চলছে অবশ্য । ভোট সংস্কৃতি একেবারে সুস্থ সংস্কৃতি তৈরি করে তা আর এখন বলা যায় না । তবে এই ফুটবল-সংস্কৃতি সেই সুস্থ সংস্কৃতির লক্ষ্যে তা কি বলা যায় ?

