ছন্দা আচার্য
প্রতিবছর ১২ই আগস্ট বিশ্বজুড়ে পালিত হয় আন্তর্জাতিক যুব দিবস—একটি দিন যা শুধু উদ্যাপন নয়, বরং প্রতিশ্রুতির প্রতীক। এই দিনটি বিশ্বব্যাপী তরুণ প্রজন্মের ভাবনা, শক্তি ও সম্ভাবনাকে সামনে আনার জন্য এবং তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতিতে অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত। যুবসমাজ যেকোনো দেশের প্রাণশক্তি, তাদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা সমাজের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।
আজকের বিশ্ব দ্রুত বদলাচ্ছে—প্রযুক্তি, পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সামাজিক কাঠামো সব ক্ষেত্রেই নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। তারা শুধু আগামী দিনের নেতা নয়, বরং বর্তমানের কার্যকর অংশীদার। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গসমতা, মানবাধিকার—প্রতিটি ক্ষেত্রেই তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণই টেকসই উন্নয়নের চাবিকাঠি।
তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। বিশ্বের বহু দেশে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, মানসিক স্বাস্থ্য সংকট এবং সামাজিক বৈষম্য তরুণদের অগ্রযাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক যুব দিবস শুধু আনন্দের নয়, বরং ভাবনারও সময়—কীভাবে আমরা তরুণদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করব, যেখানে তারা তাদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের চালিকাশক্তি হতে পারে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন, প্রযুক্তিতে সহজপ্রবেশ, উদ্যোক্তা উদ্যোগকে উৎসাহ, এবং সামাজিক সচেতনতার বিস্তার—এই সবই যুবশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মূল চাবিকাঠি। বিশ্বের ইতিহাসে অনেক বড় আন্দোলন ও পরিবর্তনের পেছনে তরুণদের সাহস, ত্যাগ ও উদ্ভাবনশীলতা কাজ করেছে। আজও সেই ধারা অটুট।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—যুবশক্তি কেবল ভবিষ্যতের নয়, বর্তমানেরও সম্পদ। তাদের হাতেই রয়েছে পৃথিবীকে আরও সমতা, ন্যায়বিচার ও শান্তির পথে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। তাই আজকের দিনটি হোক প্রতিশ্রুতির, যেন প্রতিটি তরুণ তার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পায় এবং মানবতার কল্যাণে তার সম্ভাবনার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাতে পারে।