সাতসকাল :
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল শাসকদল থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনের (Shantanu Sen) ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছিল। এদিন সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) সেই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিয়ে জানায়, কারণ না জানিয়ে ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা নিয়মবহির্ভূত। বিচারপতি অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষণ, ‘নন-স্পিকিং অর্ডার’ দিয়েছে কাউন্সিল। কোনও পদক্ষেপ করা যায় না শান্তনু সেনের বক্তব্য শোনার আগে।
শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে গত ৪ জুলাই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল, তিনি অনুমতি ছাড়াই একটি বিদেশি ‘এফআরসিপি গ্লাসগো’ (FRCP Glasgow) ডিগ্রি ব্যবহার করতেন নিজের নামের পাশে। নোটিশ পাঠিয়ে কৈফিয়ত তলবের পর তাঁর রেজিস্ট্রেশন ২ বছরের জন্য বাতিল করা হয়। আর এতে তিনি প্রেসক্রিপশন লেখারও অধিকার হারাতেন। এদিকে শান্তনু সেনের দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে চক্রান্ত করে। উচ্চ আদালত সেই যুক্তির উপর ভিত্তি করেই কাউন্সিলকে ফের তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং সব নথি তাঁকে পাঠাতে বলে।
চলতি বছরের শুরু থেকেই তৃণমূলের এই চিকিৎসক নেতার সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। ‘মেয়েদের রাত দখল’ আন্দোলনে শান্তনু সেন সহ তাঁর স্ত্রীর সক্রিয় ভূমিকা, পাশাপাশি দলের অস্বস্তি বাড়ে হাসপাতালের অভ্যন্তরে দুর্নীতির অভিযোগে। এরপর তাঁকে দলীয় মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং পরে দল বিরোধী কাজের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। শান্তনু সেনকে ঘিরে বিতর্ক শুরু ওই সময় থেকেই। রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সেই বিতর্কের জেরে কিনা, উঠেছে প্রশ্ন।
রেজিস্ট্রেশন বাতিলের পর শান্তনু সেন (Shantanu Sen) বলেছিলেন, “আমি মেনে নেব না মুখ বুজে, আইনি লড়াই করব।” এদিন তিনি আদালতের পর্যবেক্ষণে সেই লড়াইয়ের প্রথম জয় পেলেন। কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়েছে, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে কাউন্সিলকে এবং অবশ্যই তাঁর বক্তব্য শুনতে হবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে।
মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়েছে, আদৌ প্র্যাকটিসের জন্য বৈধ কি না ‘এফআরসিপি’ ডিগ্রিটি , তা জানতে ইমেল করা হয়েছিল বিদেশি সংস্থাকে। এখনও মেলেনি কোনও উত্তর। তাই আগাম ব্যবস্থা নিয়েছিল তাঁরা। কিন্তু এখন সেই পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ পড়ল আদালতের নির্দেশে। প্রশ্ন উঠছে, এটা কি নিছক নিয়মভঙ্গ না কি প্রতিহিংসার ফল!

