পিয়া রায়
প্রতিবছর ২০শে মে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মানবসম্পদ দিবস (International HR Day)। এই দিনটি উৎসর্গ করা হয়েছে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষ—মানবসম্পদ (Human Resource) বিভাগে নিযুক্ত পেশাদারদের প্রতি, যাঁরা কর্মীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানের ভিত গড়ে তোলেন।
বর্তমান কর্পোরেট জগতে, কেবল প্রযুক্তি বা পুঁজি নয়—মানবসম্পদই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আর এই মানবসম্পদের পরিচর্যা ও সঠিক ব্যবস্থাপনাই করে থাকেন HR পেশাজীবীরা।
HR-এর ভূমিকা: নিয়োগ থেকে নেতৃত্ব গঠন পর্যন্ত
মানুষের মেধা ও শ্রম সঠিকভাবে ব্যবহার করাই একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আর এই কাজটি করেন মানবসম্পদ ব্যবস্থাপকরা। তাঁদের প্রধান দায়িত্ব:
# উপযুক্ত কর্মী নিয়োগ
# প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন
# কর্মপরিবেশের মান বজায় রাখা
# কর্মীদের ন্যায্য মজুরি ও সুবিধা নিশ্চিত করা
# মানসিক স্বাস্থ্য ও পেশাগত উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করা
একজন ভালো HR ম্যানেজার কেবল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন না, বরং তিনি প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি নির্মাণের কারিগর।
আন্তর্জাতিক HR দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব
এই দিনটি সর্বপ্রথম ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট (EAPM) উদ্যোগে পালিত হয়, পরে তা আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পায়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—
# HR পেশাদারদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া
# প্রতিষ্ঠান ও কর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক গঠনে তাদের গুরুত্ব তুলে ধরা
#HR সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে আলোচনা করা
বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট হাউস, সরকারি সংস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আজকের দিনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে—যেমন ওয়ার্কশপ, ওয়েবিনার, কৃতজ্ঞতা বার্তা প্রদান ইত্যাদি।
নতুন যুগে HR: প্রযুক্তির সঙ্গে সহাবস্থান
বর্তমানে HR ব্যবস্থাপনায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং, HR অ্যানালিটিক্স ইত্যাদি প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে। তবে প্রযুক্তি যতই এগিয়ে যাক, মানুষের আবেগ, সংযোগ ও সহানুভূতির জায়গাটি এখনো HR পেশাজীবীদের হাতেই নিরাপদ।
উপসংহার: মূল্যায়নই প্রেরণা
এই আন্তর্জাতিক HR দিবসে আমাদের উচিত মানবসম্পদ পেশাজীবীদের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো। তাঁরা আমাদের প্রতিষ্ঠানকে শুধু কর্মী দিয়েই পূর্ণ করেন না, তাঁরা গড়েন সহানুভূতিশীল ও প্রগতিশীল কর্মপরিবেশ।
আজকের দিনে একটি প্রশ্ন সকল প্রতিষ্ঠানের সামনে: আপনি কি আপনার মানবসম্পদকে যথাযথভাবে মূল্য দিচ্ছেন?