ছন্দা আচার্য
প্রতিবছর জুন মাসের প্রথম বুধবার পালিত হয় ‘গ্লোবাল রানিং ডে’, এক অভিনব উদ্যাপন যা মানুষকে উৎসাহিত করে দৌড়ের মাধ্যমে সুস্থ জীবনধারার দিকে এগিয়ে যেতে। ২০২৫ সালে এই দিনটি পড়েছে ৪ জুন। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ আজকের দিনে নিজেদের শরীরচর্চার যাত্রা শুরু করেন কিংবা পুরনো অভ্যাসে ফেরেন নতুন উদ্যমে।
দৌড় মানে শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি এক প্রকার মানসিক প্রশান্তির উপায়ও। গবেষণা বলছে, প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট দৌড়ালে শরীরের কার্ডিওভাসকুলার ক্ষমতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং ডিপ্রেশন বা উদ্বেগের মাত্রা অনেকাংশে হ্রাস পায়।
গ্লোবাল রানিং ডে-র মূল বার্তাটি হল— “Running is for Everyone।” অর্থাৎ বয়স, লিঙ্গ, সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সবাই এই সুস্থ অভ্যাসটি নিজেদের জীবনের অংশ করতে পারেন। আজকের দিনে স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মানুষ পর্যন্ত সকলে নিজেদের মতো করে ছোট বা বড় পরিসরে দৌড়ে অংশ নেন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আজ আয়োজিত হচ্ছে নানা দৌড় প্রতিযোগিতা, ভার্চুয়াল রানিং চ্যালেঞ্জ ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা, ফিটনেস অ্যাপ এবং দাতব্য সংস্থা এই দিনে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন খুলে দেয় এবং মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে কমপক্ষে ৫ মিনিট হলেও দৌড়ানোর জন্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দৌড়ে এমন কিছু হরমোন নিঃসৃত হয় যেগুলি মস্তিষ্কে আনন্দ ও আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তোলে। একে 'রানার'স হাই' বলা হয়। নিয়মিত দৌড়ানো ব্যক্তিদের শরীর রোগ প্রতিরোধে অধিক সক্ষম, তাদের ঘুম ভালো হয়, মানসিক চাপ কম থাকে এবং স্মৃতিশক্তি ও মনঃসংযোগ ক্ষমতা বাড়ে।
বাংলাদেশ বা পশ্চিমবঙ্গেও আজ বিভিন্ন ফিটনেস গ্রুপ ও রানার্স ক্লাবের উদ্যোগে সকাল-সন্ধ্যা ‘ফান রান’ এবং ‘কমিউনিটি রান’-এর আয়োজন করা হয়েছে। এতে সব বয়সী মানুষ অংশ নিচ্ছেন, কেউ ফিটনেসের উদ্দেশ্যে, কেউবা নিছক আনন্দে।
এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাস্থ্যই হল আসল সম্পদ। এবং সুস্থতার পথে সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর একটি পন্থা হল দৌড়। ব্যায়ামের জটিলতা ছাড়াই, যে কেউ একটি জোড়া জুতো পরে বেরিয়ে পড়তে পারেন দৌড়াতে — নিজের শহরের অলিগলি, মাঠ বা পার্কে।
গ্লোবাল রানিং ডে ২০২৫-এ আপনি কী করলেন?
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: আজ অন্তত ১০ মিনিট কি আমি নিজের শরীরকে উপহার দিয়েছি?
আসুন, আজকের দিন থেকে নতুন করে শুরু করি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় জীবনের দৌড়!