Select language to read news in your own language

বাংলার শিক্ষাক্ষেত্র শাসক রাজনীতির সংস্কৃতির প্রতিফলন 

নরেন্দ্রনাথ কুলে 


আজকের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সম্পর্কে যদি বিতর্কসভার আয়োজন করা হয়, দলীয় রাজনীতির প্রতিনিধিগণ বিভিন্ন শব্দবাণে তার সৌন্দর্য রচনা করতে এতটুকুও দ্বিধা করবে না । একটাই কথা উঠে আসবে-- সব দল মানুষ ও সমাজের কাজ করার জন্য তারা বদ্ধপরিকর বলে নানা উদাহরণ হাজির করবে। শাসক দল ও বিরোধী দল নিজের নিজের মত করে সেই উদাহরণে নিজের দিকেই রায় ঘোষণা করবে । তবে বিরোধী দল শাসকের দুর্নীতি স্বজন পোষণ জনবিরোধী মনোভাব কার্যকলাপ নিয়ে গলা ছাড়বে । সেই আবার শাসক দলে চলে এলে একই মনোভাব দেখাবে । এর অন্যথা হয়েছে এমন প্রমাণ ক্ষমতায় বসা কোন দলই দিতে পারবে না । শাসক দলের বিরোধী হলেই সে স্বজনপোষণ দুর্নীতি করবে না তা প্রমাণিত নয় । আসলে শাসক, বিরোধী যা কিছু তা ভোট লক্ষ্য করেই । ভোটে জিতে এলেই তার সততার জয়, মানুষের জয় বলে বলতে হয় । অথচ শাসক মানুষকে ভয় দেখিয়ে রাখতে চায় । শাসক দলের চরিত্র বিরোধী সত্য কন্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে রাখতে চায় । এর উদাহরণ সকল শাসক প্রমাণ দিয়েছে এবং দেয় । গণতন্ত্র মানে ভোট হলেও, ভোট মানেই গণতন্ত্র বাঁচে এমন কথা বলা যায় না । বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবেশ তার উত্তর দিয়ে চলেছে । শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকদের কথা শোনা হয় না, ছাত্রদের কথা শোনা হয় না । শিক্ষকদের ছাত্রদের শুধু শুনতে হবে মানতে হবে । নোংরা রাজনীতির অন্যায় কর্মকান্ড মুখ বুঝে সহ্য করতে হবে । নইলে ছাত্রীদের ধর্ষণের শিকার হতে হবে । এমনকি খুনের হুমকি থেকে খুন সবকিছুই হতে পারে এবং হচ্ছেও । ক্ষমতা রাজনীতি প্রশাসনকে ব্যবহার করে সমস্ত অন্যায়কে চাপা দিতেই যেন তার গণতান্ত্রিক অধিকার । আজকে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নোংরা রাজনীতির কবলে যেন অনৈতিক কর্মকান্ডের আখড়া তৈরি হয়েছে । একদিকে শিক্ষা সংক্রান্ত পঠনপাঠন আইনিভাবে নিম্নমান করে তোলা হচ্ছে । আর একদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নোংরা রাজনীতির গুন্ডাদের আধিপত্য । তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে শিক্ষা শুধু আক্ষরিক অর্থে যুক্ত থাকা ছাড়া আর কিছুই থাকে না । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি সুস্থ রাজনীতির বাইরে থাকে তাহলে সমাজে নৈতিক চরিত্র বলে কিছু থাকে না । এই নৈতিক চরিত্র যত না থাকবে তত রাজনীতির কারবারিদের সুবিধা হবে । তাই শাসকের প্রথম কাজ শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা । অবশ্যই তা শিক্ষার নামে । সবার জন্য শিক্ষা থাকবে কেবল কাগজে কলমে আর রাষ্ট্রের কথায় । 
আজকে শিক্ষার অবস্থার কথা বিশিষ্ট দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিল যেন আগেই বলেছিলেন-"এটা কোনো মতে সহ্য করা যায় না যে, একটি সরকার তার সরকারি ক্ষমতাবলে বা অন্য কোনভাবে জনসাধারণের শিক্ষার উপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব বজায় রাখবে । এই ধরনের ক্ষমতা থাকলে বা বাস্তবে তাকে প্রয়োগ করলে তা স্বৈরতান্ত্রিক হতে বাধ্য । যে সরকার জনসাধারণের মতামত ও আবেগকে ছোটবেলা থেকে পরবর্তী জীবন পর্যন্ত নিজেদের মত করে গড়ে তুলতে পারে সেই সরকার তাদেরকে দিয়ে যা খুশি তাই করতে পারে ।" 

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon



Tags: