নরেন্দ্রনাথ কুলে
দেশের চলমান গণতন্ত্র মানে আজ শুধু বোঝায় নির্বাচন । আর নির্বাচন এলেই মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে সব দলের চিৎকার অবিদিত নয় । কিন্তু সেই চিৎকারে মানুষের ভাল হচ্ছে কিনা সে-সম্পর্কে বিড়াল ও মোরগের এক গল্প মনে পড়ে । সেই গল্পে দেখা যায়, বিড়াল জোর দিয়ে বলছে মোরগ সমাজের ক্ষতিকর । কারণ তার চিৎকার । বিড়ালের এই মতের বিরুদ্ধে মোরগ যখন যুক্তি দেখায়, তখন বিড়াল আবার অন্য অভিযোগ তোলে । মোরগ আবার যুক্তি দিয়ে তার বিরোধিতা করে । কিন্তু কোন যুক্তিই গ্রাহ্য নয় বিড়ালটির কাছে । আসলে মোরগকে উদরপূর্তি করতে বিড়ালের নানা ছলনা । তবে সেই ছলনার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে বিড়াল অবশেষে বলে যে আর কোন কথা হবে না, সে মোরগকে খাবেই । ঈশপের এই গল্পে বাংলায় প্রবাদ হল 'দুরাত্মার ছলের অভাব নেই' । দুরাত্মা মানে খারাপ বা দুর্জন যাই বলি না কেন, তারা সবাই ছলে-বলে-কৌশলে কেবল নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে । সেখানে অন্যের অবস্থা যতই দুর্বিষহ হয়ে উঠুক না কেন তা নিয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ থাকে না । অথচ এই দুর্জনের মুখমিষ্টি অতুলনীয় ।
দেশের চলমান গণতন্ত্র মানে আজ শুধু বোঝায় নির্বাচন । আর নির্বাচন এলেই মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে সব দলের চিৎকার অবিদিত নয় । কিন্তু সেই চিৎকারে মানুষের ভাল হচ্ছে কিনা সে-সম্পর্কে বিড়াল ও মোরগের এক গল্প মনে পড়ে । সেই গল্পে দেখা যায়, বিড়াল জোর দিয়ে বলছে মোরগ সমাজের ক্ষতিকর । কারণ তার চিৎকার । বিড়ালের এই মতের বিরুদ্ধে মোরগ যখন যুক্তি দেখায়, তখন বিড়াল আবার অন্য অভিযোগ তোলে । মোরগ আবার যুক্তি দিয়ে তার বিরোধিতা করে । কিন্তু কোন যুক্তিই গ্রাহ্য নয় বিড়ালটির কাছে । আসলে মোরগকে উদরপূর্তি করতে বিড়ালের নানা ছলনা । তবে সেই ছলনার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে বিড়াল অবশেষে বলে যে আর কোন কথা হবে না, সে মোরগকে খাবেই । ঈশপের এই গল্পে বাংলায় প্রবাদ হল 'দুরাত্মার ছলের অভাব নেই' । দুরাত্মা মানে খারাপ বা দুর্জন যাই বলি না কেন, তারা সবাই ছলে-বলে-কৌশলে কেবল নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে । সেখানে অন্যের অবস্থা যতই দুর্বিষহ হয়ে উঠুক না কেন তা নিয়ে তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ থাকে না । অথচ এই দুর্জনের মুখমিষ্টি অতুলনীয় ।
অতুলনীয় মুখমিষ্টি দিয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার ছবি প্রতিমূহুর্তেই চোখে পড়ছে । রাজনৈতিক পরিবেশে মুখমিষ্টি বলতে কি হতে পারে ? এ প্রশ্নে ভোট-রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি মানুষের মনকে ভোট পরিবেশে একপ্রকার মোহিত করতে পারে তা বলা যায় । মানুষ কি চাইছে তা তাদের জানার দরকার নেই। কিন্তু ভোট-রাজনীতি কি দেবে তা ফলাও করে সবাই বলে । তবে প্রতিশ্রুতি রাজনীতির মুখমিষ্টি হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা সে-তর্ক হতে পারে । কিন্তু এই মুখমিষ্টি বা প্রতিশ্রুতিতে ভোটে জেতার স্বার্থ ছাড়া আর কিছু থাকে না । ভোটে জেতার সেই স্বার্থ আর মানুষের স্বার্থ পরিপূরক হয় বলে একেবারেই জোর দিয়ে আর বলা যায় না । ভোটের গণতন্ত্রে মানুষের স্বার্থ যদি না থাকে, তাহলে মানুষের স্বার্থ দেখবে কে ? তাহলে মানুষকে তাঁর নিজেদের স্বার্থ নিজেদেরকেই দেখতে হবে । কিন্তু কোন পথে তা দেখতে পাবে সেটা মানুষের কাছে পরিষ্কার নয় । মানুষের কাছে পরিষ্কার করে দেওয়ার কান্ডারী আজ কোথায় ? এমন অবস্থায় নজরুল ইসলামের সেই 'কান্ডারী' কই, যাঁকে হুঁশিয়ার দিয়ে বলা যায়,
'অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানেনা সন্তরণ/ কান্ডারী ! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তিপণ !/ 'হিন্দু না ওরা মুসলিম?' ওই জিজ্ঞাসে কোন জন ?/কান্ডারী! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা'র !'