নরেন্দ্রনাথ কুলে
বাংলা উন্নত সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ । এ নিয়ে বাঙালীর গর্বের শেষ নেই। এখন বাংলার তৃণমূল শাসক সেই গর্বের বাহক হিসেবে তাদের গর্ববোধে খামতি নেই। কলকাতার রাস্তার মোড়ে মোড়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা যায় । সুভাষ মেলা, বিবেক মেলা, গানমেলা রাজ্যজুড়ে তার অনুষ্ঠান চোখে পড়ার মত । এছাড়াও বাংলার লোকসংস্কৃতির প্রদর্শন মেলা থেকে খাদ্য মেলা থেকে নানা সাংস্কৃতিক মেলার আয়োজনের উদ্দীপনা বাঙালীদের মুগ্ধ না করে পারে না । মেলা আর উৎসবের পরিবেশকে আরো সমৃদ্ধ করে কলকাতার সাহিত্য উৎসব। কবিতা উৎসব যার অঙ্গ । এই বাংলায় কবিতা অ্যাকাডেমির প্রবর্তন করেন বাংলা সংস্কৃতির অনত্যম বাহক বলে নিজেকে প্রমান করার চেষ্টা করে চলেছেন যে মানুষটি তাঁর পরিচয় দিতে তাঁরই অনুগামীরা তাঁকে কেউ দেবী দুর্গার সাথে তুলনা করেন, আবার কেউ মা সারদা র সাথে তুলনা করেন । এই পরিচয়ে তাঁর আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না নিশ্চয় । তবে তাঁর বিজ্ঞাপিত সংস্কৃতির আবহাওয়া দুর্নীতি নামক পরিবেশে দূষিত হয়ে পড়েছে । এই দূষণ সম্পর্কে তাঁর ও তাঁদের অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই। তবুও অতীত শাসনের তুলনা টেনে দুর্নীতি লঘু করার আপ্রাণ চেষ্টা চলে । যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট, ক্ষমতা আর দুর্নীতি এমন পরিপূরক যে মানুষের চেতনায় ধরা পড়ার ব্যবস্থাকে বন্ধ করে দিতে শাসক পিছপা হয়না । আর এই আবহাওয়ায় সাহিত্য সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যাঁরা সরকারি ছায়া অবলম্বনে উপস্থিত তাঁরাও দুর্নীতির স্পর্শে অভিযুক্ত হচ্ছেন । কবিতা অ্যাকাডেমির সিংহাসন আলো করা কিছু মানুষ কবিতা উৎসবে অর্থের বিনিময়ে কবিদের কবিতা পাঠের সুযোগ করে দেবে বলে এমনই অভিযোগ উঠেছে । এ অভিযোগের সত্যতা যাই হোক, তবে বাংলার সংস্কৃতির মান যে কতটা উন্নত হয়েছে তা পরিষ্কার। কবিতা সিন্ডিকেটে অভিযুক্ত কবিরা সত্যিই কি সমাজ ও সাহিত্যের বাহক হতে পারে ! শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানুষের সামাজিক জীবনে ক্ষমতা রাজনীতির সিন্ডিকেট সংস্কৃতির সংকটকে কতটা ত্বরান্বিত করেছে কবিতা সিন্ডিকেট সে কথা বলে দেয় । বাংলার প্রশাসনিক প্রধান অ্যাকাডেমির সভাপতি মানবিক বলে মন্তব্য করায় নাকি অ্যাকাডেমির মানুষদের কলঙ্কিত করার হীন প্রয়াস বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন । এমনকি যাঁরা মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে, প্রমাণ না দিতে পারলে তাদের শাস্তি পেতে হবে । শাস্তির কথা জোর গলায় তিনি বলতে পারেন । কারণ, তদন্ত যারা করবে তারা সরকারপোষিত ছাড়া আর কে ? সর্ষের মধ্যে ভুত আজ আর লুকিয়ে থাকে না, তা সকলেরই জানা। তবে 'হীরকের রাজা ভগবান' বলা হীরক রাজের লোভী সভাকবির ছায়ায় আজকে বাংলার সংস্কৃতি কি সত্যিই আমাদের গর্বের!