সোমনাথ চৌধুরী
তৃনমূলের দুপুটে নেতা তিনি।বোলপুর থানার (Bolpur Police Station) আইসিকে(IC) 'হুমকি' দেওয়ার অভিযোগ সেই অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে । ইতিমধ্যেই একটি অডিও ক্লিপিং ভাইরাল হয়েছে, সেখানে একজনকে কেষ্টর নাম নিয়ে বোলপুর থানার আইসি-কে হুমকি দিতে শোনা যাচ্ছে (অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি নিউজ ডট সাতসকাল ডট কম )। এই নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি । অবশেষে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে এই নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা।
ভাইরাল সেই অডিওয় বোলপুরের আইসির উদ্দেশে এক ব্যক্তিকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে শোনা যায়। সত্যিই আপনার কি সেই কণ্ঠস্বর ? সংশ্লিষ্ট সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে অনুব্রত মন্ডলকে এই প্রশ্ন করা হয়, উত্তর আসে, 'না'। তাহলে কি কেউ সাজিয়ে এই অডিও ছড়িয়ে দিয়েছে? কেষ্ট মন্ডলের উত্তর, 'সেটা আমি বলতে পারব না'।
এরপর অনুব্রত মণ্ডলকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি আইসি-কে (IC) হুমকি দিয়েছেন কিনা? জবাবে তিনি বলেন, 'আমি কেন আইসি-কে হুমকি দেব? উনি একজনকে মেরে হাত-পা ভেঙে দিয়েছেন। আমি ফোন করলে বলে ফোন রাখ'। একথা বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
এদিন বৃহস্পতিবারে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন অনুব্রত মন্ডল । তিনি বলেন, 'এফআইআর(FIR) করতে গেলেও আইসি(IC) টাকা চান। বিগত দু'মাস ধরে এই আইসি-কে সরানোর জন্য এসপি(SP) , অ্যাডিশনাল এসপি(ASP) এমনকি ডিজি(DG) রাজীব কুমারকেও আমি বলেছি',এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল ফেলে দেয় 'হুমকি' ও অকথ্য 'গালাগালি' দেওয়ার অডিও।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, অনেকের দাবি বোলপুরের আইসি(IC) নাকি কাজল শেখের (Kajal Sheikh) ঘনিষ্ঠ।ইতিমধ্যেই ভাইরাল অডিও বিতর্কে কাজল শেখও মুখ খুলেছেন।বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত ও কাজলের 'সমীকরণ' কারোর অজানা নয়। সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে কাজল শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল নেতা বলেন, 'কিছু বলতে পারব না আমি এটা নিয়ে । সবটাই অভিযোগ,এর সত্যতা জানা নেই'।
উল্লেখ্য , গরু পাচার মামলায় গত বছর জামিন পেয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকেই রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal), সম্প্রতি তিনি খুইয়েছেন জেলা সভাপতির পদ । বীরভূমের জেলা কমিটি থেকে এই পদটাই তুলে দিয়েছে তৃনমূল কংগ্রেস । অবশ্য কেষ্ট রয়েছেন ৯ সদস্যের কোর কমিটিতে । এদিন তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্ট করে জানানো হয়েছে, 'পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অনুব্রত মণ্ডলের এমন মন্তব্যকে সমর্থন করে না দল।' এরপরই অনুব্রতকে সময় বেঁধে দিয়ে তৃণমূলের নির্দেশ, ' তাঁকে নিঃশর্ত ভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হল। যদি তিনি ক্ষমা না চান, তার ভিত্তিতেও তাঁকে শোকজ করা হবে।
তবে অনুব্রতকে শুধু ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েই কিন্তু থেমে যায়নি তৃণমূল শিবির। সূত্রের খবর, এবার অনুব্রতর নিরাপত্তা কমানোর পথে নামল রাজ্য সরকার। তিনি রাজ্যের তরফে Y+ নিরাপত্তা পেতেন । এমনকি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও বহাল ছিল অনুব্রত নিরাপত্তা। কিন্তু ভাইরাল অডিয়ো নিয়ে রাজ্যজুড়ে পরিস্থিতি সরগরম হতেই নিরাপত্তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। জানা গিয়েছে, Y+ নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করেনি সরকার। শুধুমাত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে থাকা বাড়তি পিএসও (PSO) গুলিকে।
আবার নতুন বিতর্কে জড়ালেন তিনি, যদিও তাঁর উপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা।