পিয়া রায়
২৫ মে— এই দিনটি শুধু আফ্রিকার মানুষের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বয়ে আনে। ১৯৬৩ সালের এই দিনে প্রতিষ্ঠিত হয় আফ্রিকান ইউনিয়ন (তৎকালীন OAU – Organization of African Unity)। আর সেই থেকেই Africa Day পালন করা হয় গোটা মহাদেশ জুড়ে। এই দিবসটি শুধু ইতিহাসের স্মরণ নয়, বরং একটি অঙ্গীকার—আফ্রিকার মানুষ, ঐতিহ্য, সংগ্রাম এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নের প্রতি সম্মান জানানো।
ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল ছিন্ন করে স্বাধীনতার পথে পা বাড়ানো আফ্রিকার বহু দেশের জন্য এই দিনটি ছিল নতুন অধ্যায়ের সূচনা। আফ্রিকান ইউনিয়ন গঠনের মাধ্যমে তারা চেয়েছিল নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করা, উন্নয়নের পথে হাত মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া, এবং আফ্রিকান জনগণের অধিকার রক্ষায় একত্র হওয়া।
আফ্রিকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ। এখানে রয়েছে ৫০টিরও বেশি দেশ, ১৫০০টিরও বেশি ভাষা এবং হাজারো সংস্কৃতির মেলবন্ধন। এই বিশাল বৈচিত্র্যই আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শক্তি। Africa Day সেই বৈচিত্র্যকে উদ্যাপন করে, মনে করিয়ে দেয়—ভাষা, ধর্ম, জাতি ভিন্ন হলেও আমরা সবাই এক বৃহৎ মানব পরিবার।
বর্তমান সময়ে আফ্রিকা শুধু ইতিহাসের ভারবাহী নয়, বরং সম্ভাবনার প্রতীক। কৃষি, খনিজ সম্পদ, পর্যটন, শিক্ষা, প্রযুক্তি—বিভিন্ন ক্ষেত্রে আফ্রিকা দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ‘ডিজিটাল আফ্রিকা’ গড়ার স্বপ্ন এখন আর কল্পনা নয়। আফ্রিকার তরুণ প্রজন্ম উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে Africa Day এখন শুধু ঐতিহাসিক স্মরণ নয়, বরং এক ভবিষ্যত গড়ার সংকল্প।
Africa Day আমাদের মনে করিয়ে দেয়—স্বাধীনতা, সম্মান ও আত্মপরিচয়ের জন্য সংগ্রাম সার্বজনীন। আফ্রিকার মানুষের আত্মত্যাগ, সাহস ও ঐক্য আমাদের শিক্ষা দেয় কিভাবে আমরা বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য খুঁজে নিতে পারি।
বাংলাদেশ-সহ ভারতের অনেক অংশে আফ্রিকান সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। শিক্ষা ও ব্যবসা ক্ষেত্রে আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতাও বাড়ছে। এই দিবসে তাই আমরা আফ্রিকাকে আরও কাছ থেকে জানি, বুঝি এবং শ্রদ্ধা জানাই।
Africa Day শুধু একটি মহাদেশের দিবস নয়—এটি মানবজাতির ঐক্য, অধিকার ও উন্নয়নের বার্তা।
“আফ্রিকা এক বিস্ময়, যার প্রতিটি ধূলিকণাতেও রয়েছে ইতিহাস, সংগ্রাম আর সম্ভাবনার ছোঁয়া।”
আজকের দিনে আমরা আফ্রিকাকে জানাই ভালোবাসা ও সম্মান, এবং আশাবাদী হই—একটি সুন্দর, সাম্যভিত্তিক পৃথিবীর।