যোগমায়া আচার্য
প্রতি বছর ১৫ জুন পালিত হয় বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস — যে দিনটি উৎসর্গিত প্রবীণ ও বয়স্ক ব্যক্তিদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করার লক্ষ্যে। প্রবীণরা পরিবারের ভিত্তিপ্রস্তর, অভিজ্ঞতা ও ঐতিহ্যের বাহক। তাদের ঘাম, আত্মবলিদান ও ভালোবাসাই নতুন প্রজন্মকে সামনে এগোতে উৎসাহিত করেছে। কিন্তু সেই প্রবীণরাই অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতন, অবহেলা ও অপমানের শিকার হন — যা সত্যিই কলঙ্কজনক ও অগ্রহণযোগ্য।
প্রবল দুর্বলতা, অসুস্থতা ও নির্দরতা তাদের অনেককে আত্মবিশ্বাসহীন ও অসহায় করে তোলে। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, অর্থ আত্মসাৎ, মানসিক চাপ দেওয়া বা উপেক্ষা — এগুলো প্রবীণ নির্যাতনের অপরিহার্য অংশ। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যরাই এর সাথে জড়িত থাকে, যা নির্যাতনকে আরও বেদনাদায়ক ও কলঙ্কিত করে তোলে।
বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস তাই সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চায়, প্রবীণরা ভালোবাসা ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার রাখেন। তাদের সাথে ভালো ব্যবহার ও সম্মান প্রকাশ করাই হোক সুস্থ ও সুন্দর পরিবারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠার পথ।
সমাজে প্রবীণরা যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা রেখে গিয়েছে তা অমৃতসম — যা নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাতে পারে। তাই তাদের ঘরে ও আশেপাশে নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করাই আমাদের সবার কর্তব্য। নির্যাতন বা অবহেলা যে অপরাধ, তা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং অপরাধ প্রকাশিত হলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশ্ব প্রবীণ নির্যাতন সচেতনতা দিবস হলো সেই দিন, যেদিন সবার অঙ্গীকার করা উচিত যে প্রবীণরা ভালোবাসা ও নিরাপত্তায় থাকতে পারবেন, নির্যাতন বা অপমানের বাইরে। প্রবীণরা যে ভালোবাসা দিয়েছে ও আশীর্বাদ করেছে, তা তাদেরও ফেরত দেওয়া উচিত — সম্মানে, ভালোবাসায় ও মর্যাদায়। এই দিনটি হোক সবাইকে সেই অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দেওয়ার দিন — প্রবীণরা অপরাধ বা নির্যাতনের পাত্র নন, তারা ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার আধার।