পাঠক মিত্র
বিদ্যুত ব্যবহারকারী কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছে তার হিসেব নেওয়ার জন্য এতদিন যে মিটার ব্যবহৃত হত তা এখন আর ব্যবহৃত হবে না । তার পরিবর্তে স্মার্ট মিটার ব্যবহৃত হবে । তার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল । রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ অবশ্যই নতুন বিদ্যুত আইনের মান্যতার পরিপ্রেক্ষিতে যা গ্রাহক বিরোধী নীতি বলে প্রতিবাদ হয়েছে এবং হচ্ছে । কিন্তু বাংলায় এই স্মার্ট মিটার বসানো হবে না বলে বাংলার সরকার জানিয়ে দিয়েছেন । রাজ্য সরকার নিজে থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কিন্তু নয় । স্মার্ট মিটার যে সমস্ত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে তাঁদের বিদ্যুৎ বিল পুরনো মিটারের তুলনায় এতটাই বেশি বিল দিতে হয়েছে যে তাঁদের পথে নেমে প্রতিবাদ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না । তবে এই প্রতিবাদকে রাজ্য সরকার মান্যতা দিয়ে স্মার্ট মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে বলে সরকারটি জনগণের তা কিন্তু প্রমাণ দিয়েছে বলে বলা যায় না । তবে স্মার্ট মিটার সহ নতুন বিদ্যুৎ নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার ও আন্দোলন করছে 'বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি' নামের এক সংগঠন যাঁরা শুধু বাংলা জুড়ে নয় দেশজুড়ে তাঁরা নতুন বিদ্যুতনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে ।
বিদ্যুত ব্যবহারকারী কত ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করেছে তার হিসেব নেওয়ার জন্য এতদিন যে মিটার ব্যবহৃত হত তা এখন আর ব্যবহৃত হবে না । তার পরিবর্তে স্মার্ট মিটার ব্যবহৃত হবে । তার জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছিল । রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ অবশ্যই নতুন বিদ্যুত আইনের মান্যতার পরিপ্রেক্ষিতে যা গ্রাহক বিরোধী নীতি বলে প্রতিবাদ হয়েছে এবং হচ্ছে । কিন্তু বাংলায় এই স্মার্ট মিটার বসানো হবে না বলে বাংলার সরকার জানিয়ে দিয়েছেন । রাজ্য সরকার নিজে থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কিন্তু নয় । স্মার্ট মিটার যে সমস্ত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে তাঁদের বিদ্যুৎ বিল পুরনো মিটারের তুলনায় এতটাই বেশি বিল দিতে হয়েছে যে তাঁদের পথে নেমে প্রতিবাদ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না । তবে এই প্রতিবাদকে রাজ্য সরকার মান্যতা দিয়ে স্মার্ট মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে বলে সরকারটি জনগণের তা কিন্তু প্রমাণ দিয়েছে বলে বলা যায় না । তবে স্মার্ট মিটার সহ নতুন বিদ্যুৎ নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার ও আন্দোলন করছে 'বিদ্যুৎ গ্রাহক সমিতি' নামের এক সংগঠন যাঁরা শুধু বাংলা জুড়ে নয় দেশজুড়ে তাঁরা নতুন বিদ্যুতনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে ।
স্মার্ট মিটার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সুবিধার জন্য স্মার্ট নয় । গ্রাহকদের পকেট কাটার জন্য এক্কেবারে স্মার্ট । তার মানে বিদ্যুৎ সরবরাহকারীদের জন্য স্মার্ট। পয়সা আগে না ভরলে যেমন স্মার্ট ফোন অচল, তেমন পয়সা আগে না দিলে স্মার্ট মিটার অচল মানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ । অতএব ফেলো কড়ি মাখো তেল । কড়ি ফেললেও তেল কতটা তা গ্রাহকের কাছে অধরা । এই তেল আছে পরক্ষণে না ও থাকতে পারে । এ ব্যাপারে মিটারটি বেশ স্মার্ট। অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা হয়ে পড়বে জটিল যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে ।
আজকে বিদ্যুৎ ছাড়া সভ্যতা অচল । অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে বিদ্যুৎ অন্যতম যা পরিষেবার একটি বিশেষ অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয় । তাই বিদ্যুৎ সরকারী পরিষেবায় ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা একসময় যেত । এই পরিষেবায় 'লাভ নয় এবং লোকসানও নয়' পদ্ধতি অনুসরণের কথা সরকারি আইন ছিলই । কিন্তু সেই আইন পরিবর্তন করতে করতে আজ বিদ্যুৎকে প্রয়োজনীয় পণ্যে রূপান্তরিত করা হয়েছে যা বেসরকারি হাতে সমর্পিত হতে চলেছে বা কোথাও তা হয়েছে । বেসরকারি হাত ব্যবসা করবে লাভ করবে এটাই তো স্বাভাবিক। কারণ এরা সমাজসেবার জন্য তো ব্যবসা করে না । তাহলে বিদ্যুৎ থেকে শুধু লাভ পাবার আশায় নয়, অতি লাভের হাতছানিতে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । অতি লাভের নেশায় গ্রাহককে তাদের লভ্যাংশের শিকার হতে বাধ্য করার ব্যবস্থা নতুন আইনে পাকাপাকি করে রাখা হয়েছে । আজকের পরিষেবামূলক সমস্ত ক্ষেত্র বেসরকারি হাতে তুলে দিতে এতটুকু দ্বিধা নেই কোন সরকারের ই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা আজ স্বাভাবিক স্তরে পৌঁছে গেছে । অথচ সরকার জনগণের বলে বুক ফুলিয়ে দাবি করে । স্মার্ট মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাঁরা প্রমাণ করবে যে তাঁরা জনগণের l কারণ সামনে ভোট । জনগণের হলে রাজ্য সরকার নতুন বিদ্যুতনীতির বিরুদ্ধে আগেই প্রতিবাদ করত । কিন্তু প্রতিবাদ না করে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্ট মিটার এখনও বাতিল করেনি । তাই রাজ্য সরকার এই মূহুর্তে বাতিল বললে তার স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় থেকেই যায় ।
বাংলার বুকে স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদের কথা যারা তুলছে তারা সকলেই কি সেই প্রতিবাদের যোগ্য ? বিশেষ করে ভোটের কথা ভেবে যারা প্রতিবাদ করছে, নিজেদের প্রতিবাদী বলে মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে চাইছে, তাদের চেনা সহজ হলেও ভোট এলেই কিন্তু মানুষ ভুলে যায় । ভোটমুখী দল ক্ষমতায় থাকলে এক রূপ, ক্ষমতায় না থাকলে আর এক রূপ । এ রূপ মানুষের কাছে অপরিচিত নয় । এদের রূপ রূপান্তরে মানুষ ভুলে যায় কে তাঁদের !
আজকে স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে বাংলা জুড়ে লাগাতার প্রতিবাদ করে চলেছে একমাত্র সংগঠন 'বিদ্যুৎ গ্রাহক Association'। যাদের আন্দোলন ভোট রাজনৈতিক দল ও নেতার মিডিয়া ফুটেজের কাছে অতি নগন্য । এমনকি স্মার্ট মিটার বসানোর সাম্প্রতিক প্রতিবাদী আন্দোলনে এই সমিতির নাম উচ্চারিত হয় নি বা করা হয় নি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে । করলেও তা অতি নগণ্য । আসলে সরকার কাদের হয়ে কাজ করে তা মানুষের কাছে আড়াল করার একটা প্রয়াস ছাড়া এ আর কিছুই নয় । তবুও জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ করে । নতুন বিদ্যুত আইন-যে কর্পোরেটের স্বার্থে যা স্মার্ট মিটারে ভুক্তভোগী মানুষ বুঝেছে যাঁদের প্রতিবাদী আন্দোলন বলে দিয়েছে । স্মার্ট মিটার রাজ্য সরকার বাতিল বলে ঘোষণা করলেও তার স্থায়িত্ব বেশিদিন নয় কারণ কেন্দ্রীয় সরকার তা বাতিল করেনি । কেন্দ্রীয় সরকারের কোন জনবিরোধী আইনের বিরোধিতা করেনি রাজ্য সরকার । যা কিছু বিরোধিতা শুধু মঞ্চে আর চ্যানেল বাইটে । তাই রাজ্যে স্মার্ট মিটার বাতিল হয়েছে বলে আন্দোলনের জয় পুরোপুরি নয় । সামনে ভোট । দুর্নীতি, অভয়া খুন কোনকিছুই তৃণমূলের ভোটে প্রভাব পড়ে না । এগুলো সমগ্র জনতার যাতে মাথাব্যথা হতে না পারে তৃণমূল নেতৃত্ব সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে এবং জানেও । কিন্তু স্মার্ট মিটার সমগ্র জনতাকে আন্দোলনে স্মার্ট করে দিতে পারে তৃণমূল সরকার সেটা জানে । তাই ভোটের আগে সরকারের এই পদক্ষেপ জনমোহিনী করে তোলার প্রয়াস না হলে আশ্চর্য হতে হবে বৈকি !