Select language to read news in your own language

দক্ষিণেশ্বর থেকে তারাপীঠ—আজ রাজ্যজুড়ে পালিত হচ্ছে ফলহারিণী কালীপুজো, মনোবাসনা পূরণের আশ্বাসে মাতৃসাধনা


পিয়া রায়

 

আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে পালন করা হচ্ছে ফলহারিণী কালীপুজো—একটি তান্ত্রিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পূজা। এই দিনে মা কালীর ফলহারিণী রূপে আরাধনার মাধ্যমে ভক্তরা নিজেদের পাপক্ষয় ও মনোবাসনা পূরণের প্রার্থনা করেন।

দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরে আজকের দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই তিথিতেই শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁর সহধর্মিণী শ্রীসারদা দেবীকে ষোড়শীজ্ঞানে পূজা করেছিলেন। সেই স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে দক্ষিণেশ্বরে আজ বিশেষ পূজার আয়োজন করা হয়েছে। মন্দির চত্বরভর্তি ভক্তদের ভিড়, অর্ঘ্য, ফল, প্রদীপ ও শঙ্খধ্বনিতে মুখর দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে আজ এক পরমাশান্তি বিরাজ করছে।

পশ্চিমবঙ্গের একাধিক মাতৃপীঠ—তারাপীঠ, কালীঘাট, কামারপুকুর, জয়রামবাটি, বেলুড় মঠ-সহ বহু স্থানে আজ ফলহারিণী কালীপুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোরবেলা থেকেই মন্দিরে লাইন পড়েছে। পুরোহিতরা বলছেন, আজকের দিনে কালীমাতাকে ফল নিবেদন করলে তিনি তুষ্ট হন ও আশীর্বাদ প্রদান করেন।

ভক্তরা আজ বিজোড় সংখ্যায় মরশুমি ফল যেমন আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি মা কালীর চরণে নিবেদন করেন। পূজার শেষে সেই ফল বাড়িতে রেখে দেওয়া হয় এবং এক বছর পর্যন্ত খাওয়া হয় না। মনোস্কামনা পূর্ণ হলে পরের বছর সেই ফল গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়। কেউ কেউ আজ মৌনব্রত, দরিদ্র সেবা, ও অশ্বত্থ গাছে দুধ ও কালো তিল অর্পণ করে দেবীর কৃপালাভ কামনা করেন।

শাস্ত্রমতে, এই পূজা করলে কর্মফল থেকে মুক্তি, আর্থিক উন্নতি, পেশাগত সাফল্য ও সংসারে শান্তি আসে। ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রেও বিদ্যালাভের পথ সুগম হয় বলে বিশ্বাস। তান্ত্রিকরা বলেন, এটি কেবল পূজা নয়, এক গভীর সিদ্ধির পথও।

আজকের এই পবিত্র দিনে মা কালীর ফলহারিণী রূপে পূজা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভক্তদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও মনোবাঞ্ছা পূরণের এক মহাসন্ধিক্ষণ। দক্ষিণেশ্বর হোক বা তারাপীঠ—সর্বত্র আজ ধ্বনিত হচ্ছে সেই চিরন্তন প্রার্থনা: “মা, আমাদের জীবনে শান্তি দাও, তোমার কৃপায় জীবনের অন্ধকার দূর হোক।”


ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon