Select language to read news in your own language

ন্যায়ের নামে বিশ্বসংহতি


বিয়ার ব্রাউন

 অনুবাদ: পিয়া রায়

 

আন্তর্জাতিক পরিসরে অন্যায়, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী অপরাধ নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই অন্যায়গুলোর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যদি কোনও ন্যায়বিচার না থাকে, তবে সভ্যতার মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে। এই উপলব্ধি থেকেই জন্ম হয়েছে World Day for International Justice, যা প্রতিবছর ১৭ জুলাই পালিত হয়। এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ন্যায় কেবল জাতির ভিত নয়, বরং মানবতার অস্তিত্বের রক্ষাকবচ।

১৯৯৮ সালের এই দিনে রোমে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেটির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয় International Criminal Court (ICC)। লক্ষ্য ছিল একটাই—যাতে বিশ্বের কোনও অপরাধী, যে কিনা গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ করে, সে পার না পায়; তার বিচার আন্তর্জাতিকভাবে হয়। এই আদালত আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের ন্যায়ের ভিত্তি মজবুত করে।

পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কারা করবে বাজিমাত? [পর্ব-১]

এই দিনে আমরা ভাবি, একবিংশ শতাব্দীতেও কেন নিরীহ মানুষের উপর বোমা ফেলা হয়, শিশুদের অস্ত্র ধরতে বাধ্য করা হয়, নারীদের ধর্ষণ করে যুদ্ধজয়ের অস্ত্র বানানো হয়? এর উত্তর শুধু রাজনীতি বা শক্তির খেলা নয়—উত্তরটা লুকিয়ে আছে দায়মুক্তির সংস্কৃতিতে। আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার শক্তি ও সক্রিয়তা এই দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে ভেঙে দিতে পারে।

তবে আন্তর্জাতিক বিচার শুধু অপরাধীদের সাজা দেওয়ার বিষয় নয়। এটি একটি বার্তা—বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া যে মানবতা আজও মূল্যবান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে এখনও রুখে দাঁড়ানোর মানুষ আছে। তাই ICC শুধু একটি আদালত নয়, এটি হল প্রতিটি নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের আশা, যারা চায় সত্য প্রকাশ পাক, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হোক।

এই দিনটি কেবল আইনবিদ, বিচারপতি বা রাষ্ট্রনেতাদের দিন নয়; এটি সাধারণ মানুষেরও দিন, যারা চায় যুদ্ধহীন এক পৃথিবী, যেখানে শিশু নিরাপদে ঘুমাবে, নারীরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচবে, জাতি ও ধর্মভেদে কেউ নিগৃহীত হবে না। বিশ্ব আজ যে হিংসা, বিদ্বেষ ও বৈষম্যের মুখে দাঁড়িয়ে, তার একমাত্র প্রতিষেধক হতে পারে এই আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের ধারণা।

World Day for International Justice আমাদের শেখায়—ন্যায় মানে প্রতিশোধ নয়, বরং ন্যায় মানে পুনর্নির্মাণ। অন্যায় যেখানেই হোক, যেই করুক, তার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ বিচার যেন হয় নিশ্চিত।

একটি ন্যায্য পৃথিবী গড়ার স্বপ্ন শুধু স্লোগানে নয়, বাস্তব উদ্যোগে প্রতিফলিত হোক—এই হোক আজকের দিনের শপথ। ন্যায় হোক প্রতিটি মানুষের অধিকার, এবং বিচার হোক বিশ্বমানবতার সর্বজনীন ভাষা।

 

ads banner


ads banner

Bangla eDaily to resume soon