লিয়াকত হোসেন খোকন (বাংলাদেশ)
ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে ভারতেই সবচেয়ে বেশি ইসলাম ধর্মের মানুষ বসবাস করেন।
মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ মুসলিম বসবাস করে উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে ; মহারাষ্ট্রের ডিওয়ান্ডি, মালেগাঁও এবং মধ্য প্রদেশের বুরহানপুরে। এ ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ ও বিহার রাজ্যের প্রায় এক ডজন শহরে মোট নাগরিকের প্রায় অর্ধেকই মুসলিম।
ভারতের হায়দ্রাবাদ এবং আলিগড় শহর দু’টিতে ৪০ শতাংশ করে মুসলিম বাস করে। এরপরে ভূপালে ৩৫ শতাংশ মুসলমানদের বাস। মুম্বাইতে ২২ শতাংশ নাগরিক মুসলিম। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় মুসলিম নাগরিকের পরিসংখ্যান ২১ থেকে ২৫ শতাংশ। দিল্লিতে ১৫ শতাংশ, বেঙ্গালুরুতে ১৪ শতাংশ, চেন্নাইতে ১০ শতাংশ, লখনৌতে ৩০ শতাংশ মুসলিম বসবাস করে।
মুসলিম জনঘনত্ব হিসেবে মুম্বাই শহরের ডেন্ডি বাজার, মহম্মদ আলি বাজার এবং মহম্মদ আলি রোডে মুসলিম কমিউনিটির বসবাস। ভারতের রাজধানী শহর দিল্লিতেও প্রচুর মুসলিম নাগরিকের বাস। পুরনো দিল্লি, জামিয়া নগর এবং নিজামুদ্দিনে মুসলিম জনসংখ্যা অত্যধিক বেশি।
পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কারা করবে বাজিমাত? [পর্ব-১]
কলকাতার পার্ক সার্কাস এবং মেটিয়াবুরুজের মতো এলাকায় প্রচুর সংখ্যক মুসলিম নাগরিকের বাস।
অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দ্রাবাদের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশই মুসলিম। চারমিনার এবং পুরনো হায়দ্রাবাদ শহর মুসলিম সংস্কৃতির হার হিসেবেই চিহ্নিত। উত্তরপ্রদেশের লখনৌতেও প্রচুর সংখ্যক মুসলিম বসবাস করেন। এই শহরে মুসলিম বাস বংশপরম্পরায়। বিশেষত লখনৌ শহরের চক এবং আমিনাবাদ এলাকায়। গুজরাটের আহমেদাবাদের পুরনো শহর, জুহাপুরা এলাকায় প্রচুর সংখ্যক মুসলমানদের বাস। কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুর শিবাজিনগর এবং ট্যানারি রোড এলাকায় মুসলমানদের আধিক্য বেশি। তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে ত্রিপলকেন এবং হাজারবাতি এলাকায় মুসলিম মানুষের সংখ্যা বেশি। আবার জন্মু কাশ্মীরের শ্রীনগরে মূলত মুসলিম নাগরিকের সংখ্যাই বেশি।
মহারাষ্ট্রের মুম্বাই শহরের 'এম' অক্ষরটি যেন সেখানকার মুসলিমদেরই পরিচয় বহন করছে। বিবিধের মাঝে মিলন মহান লাইনটি যেন আক্ষরিক অর্থেই কলকাতার জন্য প্রযোজ্য। কলকাতা শহর রসগোল্লার আবার নবাবেরও শহর।
হায়দ্রাবাদকে তো বলাই হয় বিরিয়ানি ক্যাপিটাল। নিজাম সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি হায়াদ্রাবাদের বিরিয়ানি। নবাবের শহর লখনৌতে মুসলিম আদব -কায়দা ফুটে ওঠে। কাবাব আর বিরিয়ানি সেরা ঠিকানা উত্তরপ্রদেশের এই লখনৌ শহর।
গুজরাটিদের ভিড়ে আহমেদাবাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মুসলিমরা। বেঙ্গালুরুতেও হিন্দু -মুসলিম মানুষের সম পরিমাণ ভিড় দেখা যায়। চেন্নাইয়ের রাস্তা থেকে হেঁটে গেলে শোনা যায় আজানের সুর। শ্রীনগর মুসলিম ধর্মের মানুষের কাছে প্রকৃত অর্থেই জান্নত।