সোমনাথ চৌধুরী
জগন্নাথের রথযাত্রাকে ঘিরে এখন দিঘায় প্রস্তুতি তুঙ্গে। সেজে উঠছে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরও। আশা করা হচ্ছে আরও বাড়বে পর্যটকদের ভিড়। তবে এর মাঝেই বাড়ছে এক নতুন সমস্যা দিঘায়। বৃদ্ধি পেয়েছে লাগামছাড়াভাবে হোটেল ও টোটোর ভাড়া। তা নিয়ে প্রবল অসন্তোষে প্রকাশ করছেন ভিনরাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থী ও পর্যটকরা। এমত অবস্থায় কঠোর পদক্ষেপ করতে চলেছে প্রশাস।
জানা যাচ্ছে, ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা যেতে টোটোতে মাথাপিছু ভাড়া যেখানে ছিল ২০ টাকা, এই ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫ গুণ বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। এছাড়াও, গড়ে এখন ২০০০ টাকা করে হয়েছে সমুদ্র থেকে দূরের হোটেল গুলোর নন-এসি রুমের ভাড়া। অথচ কিছুদিন আগে পর্যন্ত ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ছিল সেই ভাড়া আর এসি রুমের দাম কোথাও কোথাও হয়েছে ৪ হাজার টাকারও বেশি।পর্যটক সহ পুর্ণাথীরা এই লাগামছাড়া ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ।
পর্যটকদের কথায়, হোটেল আর টোটোর এই দৌরাত্ম্য মন্দির দর্শনের আনন্দ মাটি করে দিচ্ছে! এমনকী অস্বাভাবিকভাবে রাস্তার ধারের ঝুপড়ি দোকানগুলোতেও খাবারের দাম বেড়ে গিয়েছে। এবার এমন পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে প্রশাসন।ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, ভাড়া সংক্রান্ত অভিযোগ সংগঠনের ফেসবুক পেজে জানালেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই হোটেল মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে সতর্ক করা হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের।
অপরদিকে, ধর্মীয় আয়োজনের প্রস্তুতিতে মুখর দিঘা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শুরু হবে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। ৭ নম্বর গেট দিয়ে নতুন মন্দিরের তিনটি রথ বেরোবে। রথ টানার বিশেষ আয়োজনে প্রায় ৫০ জন বিদেশি ভক্ত উপস্থিত থাকবেন। যাতে দর্শনার্থীরাও রথের রশিতে হাত দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা থাকছে।
কলকাতা ইসকনের(ISKON) ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারামণ দাস জানিয়েছেন, ফুল দিয়ে সাজানো রথে চলাচল হবে তিন ঠাকুরের। আর রথযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ ভোগ ও প্রসাদ বিতরণ এক সপ্তাহ ধরে চলবে। উল্টোরথের দিন প্রচুর ভক্তদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশপাশে বসবে প্রায় ১০০টি দোকান। নতুন মন্দির থেকে আদি মন্দির পর্যন্ত রাস্তায় এলইডি স্ক্রিন বসানো হচ্ছে পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য। দিঘার হোটেল গুলির মধ্যে প্রায় ১০০টি প্রিমিয়াম শ্রেণির হোটেলে এখনও পর্যন্ত রথযাত্রার আগেই প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের আগমন ঘটেছে। প্রশাসনের ধারণা, ১ লক্ষের বেশি দর্শনার্থী আসবেন প্রতিদিন।