সোমনাথ চৌধুরী :
আরও গভীর হচ্ছে ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ (Iran-Israel War)। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ,ইরানের ৩ টি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর । শুধু তাই নয়, উদ্বেগ আরও বেড়েছে, তেহরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে বলেও। এই প্রণালী দিয়ে আসে ভারতের মোট তেল আমদানির একটি বড় অংশ। তবে, বিশ্লেষকরা বলেছেন যে বিকল্প ক্ষেত্রগুলি যেকোনও ঘাটতি পূরণের জন্য সহজেই উপলব্ধ রাশিয়া থেকে শুরু করে আমেরিকা এবং ব্রাজিল পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, রাশিয়ার তেল আমদানি করা হয় না হরমুজ প্রণালী দিয়ে । সুয়েজ খাল, কেপ অফ গুড হোপ বা প্রশান্ত মহাসাগর হয়ে আসে রাশিয়ার তেল। অপরদিকে,আমেরিকা, পশ্চিম আফ্রিকা এবং লাটিন আমেরিকা থেকেও তেল আমদানি করা যেতে পারে, যদিও সেটা একটু বেশি ব্যয়বহুল হবে।
জানিয়ে রাখি যে, ভারতের প্রধান সরবরাহকারী দেশ কাতার এই দেশ হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করে না। এর ফলে প্রভাবিত হবে না অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া এবং আমেরিকা থেকে আসা ভারতের LNG-র অন্যান্য উৎসগুলিও। এদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে পশ্চিম এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং যার ফলে ৮০ মার্কিন ডলারে পৌঁছতে পারে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম।
অন্যদিকে, ভারত জুন মাসে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ক্রয় বাড়িয়েছে ইরানের ওপর ইজরায়েলের আক্রমণের (Iran-Israel War) পর বাজারের অস্থিরতার আবহেই। জুন মাসে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয় পশ্চিম এশিয়ার সরবরাহকারী ইরাক ও সৌদি আরব থেকে আমদানি করা পরিমাণকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য বিশ্লেষক সংস্থা কেপলারের প্রাথমিক তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে জুন মাসে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনছে ভারতীয় শোধনাগারগুলি, যা বিগত ২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ।শুধু তাই নয়, যা ইরাক থেকে শুরু করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সহ কুয়েত থেকে কেনা মোট তেলের পরিমাণের চেয়েও বেশি। গত মে মাসে প্রতিদিন ১৯.৬ লক্ষ ব্যারেল রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি করেছে। জুন মাসে আমেরিকা থেকেও আমদানি বেড়ে ৪,৩৯,০০০ ব্যারেল হয়েছে। গত মাসে দৈনিক এই পরিমাণ ছিল ২,৮০,০০০ ব্যারেল । এদিকে, কেপলারের মতে, সমগ্র মাসের আমদানির হিসেব প্রতিদিন প্রায় ২০ লক্ষ ব্যারেল পশ্চিম এশিয়া থেকে। যা গত মাসের আমদানির পরিমাণের চেয়ে কম।