২০২৪ সালে ভারতের অর্থনৈতিক দৃশ্যপটে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। Capgemini Research Institute-এর 'World Wealth Report 2025' অনুযায়ী, মাত্র এক বছরে ভারতে ৩৩,০০০-এরও বেশি নতুন কোটিপতি যুক্ত হয়েছেন, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫.৬% বৃদ্ধি। ফলে, দেশের মোট হাই-নেট-ওয়ার্থ ইন্ডিভিজুয়াল (HNWI) সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৭৮,৮১০-এ, এবং তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৮.৮% বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছেছে ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে ।
এই ধনসম্পদের উত্থানের পেছনে রয়েছে স্টক মার্কেটের উত্থান, প্রযুক্তি ও ফিনটেক খাতে বিনিয়োগের জোয়ার, এবং আইপিও বুম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রবৃদ্ধির ফলে ভারত বিশ্বের অন্যতম দ্রুত ধনসম্পদ সৃষ্টিকারী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, এমনকি এই হারে চিনকেও পেছনে ফেলেছে ।
এই নতুন কোটিপতিদের মধ্যে অধিকাংশই 'Millionaires Next Door' শ্রেণির, যাদের বিনিয়োগযোগ্য সম্পদ ১ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে। ২০২৪ সালের শেষে, ভারতে এমন ৩,৩৩,৩৪০ জন ব্যক্তি ছিলেন, যাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৬২৮.৯৩ বিলিয়ন ডলার ।
ভারতের এই ধনসম্পদের উত্থান শুধু সংখ্যায় নয়, গুণগত মানেও উল্লেখযোগ্য। মুম্বাই, দেশের অর্থনৈতিক রাজধানী, এশিয়ার 'বিলিয়নিয়ার ক্যাপিটাল' হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, বেইজিংকে পেছনে ফেলে ।
এই ধনসম্পদের উত্থান ভারতের অর্থনীতির জন্য একটি শুভ সংকেত, তবে এটি আয় ও সম্পদের অসমতার দিকেও ইঙ্গিত করে। Oxfam-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষ ১% ধনীরাই দেশের মোট সম্পদের ৪০% এর বেশি নিয়ন্ত্রণ করেন, যেখানে নিম্ন ৫০% জনগণের হাতে রয়েছে মাত্র ৩% সম্পদ ।
এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো এই ধনসম্পদের প্রবৃদ্ধিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করা। সরকার ও বেসরকারি খাতে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে, এই ধনসম্পদের সুফল যেন দেশের সকল স্তরের জনগণের কাছে পৌঁছে যায়, সেটাই হওয়া উচিত আগামী দিনের লক্ষ্য।
এই ধনসম্পদের উত্থান ভারতের অর্থনীতির সম্ভাবনার প্রতিফলন, যা সঠিক নীতিমালা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে পরিণত হতে পারে।